কোমেনের ক্ষতিপূরণ চায় বাংলাদেশ

ctg-port_69894-400x254জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলের কাছে ঘূর্ণিঝড় কোমেনের কারণে ২০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইবে চট্টগ্রাম বনন্দর কর্তৃপক্ষ। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসময়ে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি এবং তার প্রভাবে দু’দিন বন্দরের যাবতীয় কাজ বন্ধ থাকায় এ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বন্দর। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যে ক্ষতির মুখে পড়ছে তা আন্তর্জাতিক পরিম-লে তুলে ধরার অভিমত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত মৌসুমি বায়ুর শুরু অর্থাৎ বছরের এপ্রিল-মে মাস এবং শেষ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। মৌসুমি বায়ু চলাকালে বা উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির তেমন নজির নেই। কিন্তু সব নজির ভঙ্গ করেছে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম-নোয়াখালী উপকূল অতিক্রম করে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় কোমেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনিষ্টিটিউট অফ মেরিন সায়ন্সেস এন্ড ফিশারিজ বিভাগের প্রফেসর সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়গুলো উত্তর বঙ্গোপসাগরে আরেকটু পশ্চিমে সাধারণত তৈরি হয়, অনেকটা সুন্দরবনের দক্ষিণাংশে এবং সেগুলো ভারত উপকূল অতিক্রম করে। কোমেনটি একটু ব্যতিক্রম কারণ এটি আরেকটু পূর্বদিকে সরে এসে আমাদের মেঘনা মোহনার কাছাকাছি উৎপত্তি হয়েছে। যার ফলে এটি বাংলাদেশের দিকে এসেছে’।
আর এই বিষয়ে কারিতাসের ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ইন ডিজেস্টার ম্যানেজমেন্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার পিন্টু উইলিয়াম গমেজ বলেন, ‘আগে এই সাইক্লোনটা প্রি মোনসুন ও পোস্ট মোনসুন পিরিয়ডেই হতো। আর এখন মনসুন পিরিয়িডেই হচ্ছে। সুতরাং এখানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি আছে’।
যে কোনো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চট্টগ্রাম বন্দরকে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলেই বন্ধ হয়ে যায় বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে পণ্য ওঠানামা। আর ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত ৪’এর উপরে উঠলে বন্ধ হয়ে যায় বন্দরের সব ধরণের কার্যক্রম। ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের কারণে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার বন্দরের কার্যক্রম পুরো বন্ধ রাখা হয়েছিলো। তাই জাতিসংঘের জলবায়ু তহবিলের লস এন্ড ড্যামেজ কমিটির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে যাচ্ছে তারা।
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, ‘ক্ষতির বিষয়টি যদি আমরা আন্তর্জাতিকভাবে ফোকাস করতে পারি তাহলে আমাদের ক্ষতিটি যে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে হচ্ছে, সেই বিষয়টি উল্লেখযোগ্য ভাবে সারাবিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবো’।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের ক্ষতির বিষয়টি সরকারিভাবেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরা দরকার। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কি ধরণের বিপর্যয় নেমে আসছে তার কোনো তথ্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে। এমনকি এ ব্যাপারে কিছুই জানেননা বলে জানান সংস্থাটির চট্টগ্রাম মহানগর পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক।-সময় টিভি


শেয়ার করুন