কুতুবদিয়ায় শিক্ষা কর্মকর্তার টাকা ফেরৎ দেওয়ার মুছলেকা

 কুতুবদিয়া প্রতিনিধি:

কুতুবদিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অবস্থিত কেএস রেডক্রিসেন্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন ও মেরামতের জন্য সরকারী ভাবে ১৩-১৪ অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত প্রায় ২ লাখ টাকা স্কুল প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজ না করে আতœসাৎ করার গুরুত¦র অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত ১৩ জানুয়ারী কৈয়ারবিল ইউপি চেয়ারম্যান আজমগীর মাতবর ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নেরর জন্য সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কাজের বাস্তবায়ন সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইলে আসল তথ্য বের হয়ে আসে। গত ২৭ অক্টোবর ১৪ইং কুতুবদিয়া সোনালী ব্যাংক শাখার ২০০০১২১৩ নং কারেন্ট একাউন্ট থেকে চেক নং ৫১৩১২৮৩ এর মাধ্যমে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে কেএস রেডক্রিসেন্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত ১লাখ ৫০হাজার টাকা  তুলে আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে গত ১৩ জানুয়ারী উপজেলা নিবার্হী কর্মকতার কার্যালয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রশিদ আহম্মদ ১৫ জানুয়ারী ব্যাংকে পূর্নরায় জমা করার মুছলেকা দিলেও এ রির্পোট লেখার আগ পর্যন্ত ব্যাংকে জমা না করে প্রতারণার আশ্রয় নেয়। এর আগে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সরকারী টাকা আতœসাতের গুরুত্বর অভিযোগ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ওই অভিযুক্ত শিক্ষক জাফর আলম গত ১৩ অক্টোবর এসএমসি কমিটির সভায় ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয়।

এ ব্যাপারে এসএসসি কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আসাদ উল্লাহ খাঁন জানান, উপজেলার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের অবস্থিত কেএস রেড়ক্রিসেন্ট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ জাফর আলম ঐ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সরকারী টাকা আতœসাৎ করেন  ১৩-১৪ অর্থ বছরে স্কুল সংস্কারের জন্য সরকারীভাবে বরাদ্ধকৃত সোনালী ব্যাংক কুতুবদিয়া শাখার ৪৩২৬ নং স্লিপ একাউন্ট থেকে সভাপতির স্বাক্ষর বিহীন ভূয়া বিল ভাউচার দিয়ে ৩০ হাজার টাকা উত্তলন করে কাজ না করে আতœসাত করেন। গত ১৩ এপ্রিল স্কুল সংস্কারের জন্য সরকারী বরাদ্ধ সোনালী ব্যাংক কুতুবদিয়া শাখায় ৪৩২৬ নং স্লিপ একাউন্টে ১৪ হাজার টাকা জমা হলে ঐ টাকা এস এম সি কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আসাদ উল্লাহ খাঁন এর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে উত্তলন করার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ পর্যন্ত কোন কাজ করেনি। এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর স্কুলের জন্য বরাদ্ধকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে অভিযোগ দিলে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়। ৮ মাস অতিবাহিত হলে এখনো পর্যন্ত প্রতিবেদন না দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজশে সোনালী ব্যাংক কুতুবদিয়া শাখার ২০০০১২১৩ নং কারেন্ট একাউন্ট থেকে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত ১লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তলন করে আত্মসাৎ করেন। স্কুলের জন্য সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত টাকার যাবতীয় খরচের বিল ভাউচারে সভাপতির স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হলেও প্রধান শিক্ষক জাফর আলম শিক্ষা অফিসারকে ম্যানেজ করে স্বাক্ষর বিহীন বিল ভাউচার দিয়ে টাকা উঠিয়ে আতœসাত করেন। এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক কতুবদিয়া উপজেলা শাখার ম্যানেজার জসিম উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানায় স্কুল প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তার আনা চেক ২টির শীল ও স্বাক্ষর দেখে সঠিক মনে হওয়ায় তাদের টাকা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সভাপতির মৌখিক অভিযোগের ফলে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক জাফর আলমের সাথে কথা বলার জন্য ফোন করলে সংবাদকর্মী পরিচয় পেয়ে কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিনুল রশিদের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এ ব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির (এস এম সি) সভাপতি আলহাজ্ব আসাদ উল্লাহ খাঁন দুর্নীতি দমন কমিশন ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষক জাফর আলম এস এমসি কমিটির সভায় ২০ হাজার টাকা ফেরত দেন। টাকা গুলে এসএমসি কমিটির সিদ্ধান্তে ৪৩২৬ নং সরকারী একাউন্টে জমা করা হয়েছে। বাকি টাকা এখনো দেয়নি। আত্মসাৎ করা টাকার আংশিক পরিমাণ পরিশোধ করলেও স্বাক্ষর জালিয়াতির ঘটনার জন্য জোর শাস্তি দাবী জানায় এসএমসি কমিটি। যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা আর করতে না পারে।

এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কয়েকদিনের মধ্যে ব্যাংকে টাকা জমা করবেন বলে জানান।


শেয়ার করুন