কস্তুরাঘাটের জন্য ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ

Kosturaghat (1)শাহেদ ইমরান মিজান :

দীর্ঘ দু’বছরের জীর্ণ দশা কাটিয়ে এবার সচল হতে চলেছে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ-রুটের কস্তুরাঘাট জেটি। এই ঘাটের উন্নয়নের জন্য ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছে কক্সবাজার পৌরসভা। শিগগিরই কাজ শুরু হয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে। কক্সবাজার পৌরসভার সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ-রুটের ঐতিহ্যবাহী কস্তুরাঘাট জেটির অবকাঠামো উন্নয়নে পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এই ঘাটটিকে আধুনিক মানের করে গড়ে তুলতে এই উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার পৌরসভা। উন্নয়ন কাজের মধ্যে থাকবে খাল খনন, সংযোগ সড়কসহ আনুসাঙ্গিক উন্নয়ন। আগামী মাসের মধ্যেই কাজ শুরু হবে জানা গেছে।

কক্সবাজার পৌরসভা সূত্র জানিয়েছে, কস্তুরাঘাটের রাস্তার দুই পাশের খাল খনন করে ৩০ ফুট প্রশস্ত ও ১০ ফুট গভীর করা হবে। এ জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কাঠের তৈরি নড়বড়ে জেটি ভেঙে ফেলে দিয়ে নদীটি ৭০০ ফুট গভীর ড্রেজিং করা হবে। মূল সড়কেই সরাসরি নৌ-যান ভিড়তে পারার জন্য এই ব্যবস্থা। জেটিঘাটে নির্মাণ করা হবে উন্নতমানের ‘পার্কিংপ্লেস।’ এই জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৮৮ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে দু’টি ভিন্ন ১ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে পৌরসভা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দীর্ঘকাল ধরে কক্সবাজার-মহেশখালী-কুতুবদিয়া নৌ-রুটের কক্সবাজার পয়েন্টের একমাত্র ঘাট ছিল কস্তুরাঘাট। এ ঘাট দিয়েই তিন অঞ্চলসহ বিপুল সংখ্যক লোকজনের যোগাযোগ। পরিচালিত হয় দ্বীপাঞ্চলের মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য। তাছাড়া সাগরে মাছ ধরার নৌকার মাঝি-মাল্লাদের যোগাযোগে মাধ্যম ছিল এ ঘাটটি।
কিন্তু নৌ-চলাচলের রাস্তার দ্ইুপাশ দখল করে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে নাব্যতা হারিয়ে ফেলে খর¯্রােতা বাঁকখালী নদী। দখলদারের থাবায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর দু’কূল। সংকুচিত হয়ে পড়ে যোগাযোগ সুবিধা। যার কারণে ঘাটের সাথে সড়কের একটা দূরত্ব তৈরি হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ঘাটে নৌ-যানের ব্যবসা নিয়ে মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মুকছুদ মিয়া ও পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আনচারুল করিমের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাদের কারণে বিভক্ত হয়ে পড়ে মহেশখালী-কক্সবাজার নৌ-রুটে চলাচলকারী বোট মালিকরা। এতে করে ৬ নং জেটিঘাট কেন্দ্রিক যোগাযোগ বেড়ে গেলে কস্তুরাঘাট অচল হর্য়ে পড়েছে। দু’বছর ধরে অচলাবস্থা চলেও আসলেও বিগত ৫ মাস ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে ঘাটটি। মূলত কস্তুরাঘাট নিয়ে দু’পক্ষের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কোন্দলে পড়ে অচল হয় কস্তুরাঘাট। যার ফলশ্রুতিতে এ নৌ-ঘাটটি ঐতিহ্য হারানোর পাশাপাশি যাত্রীরা পড়ে চরম দুর্ভোগে।

ঐতিহ্যবাহী কস্তুরাঘাট জেটি অচল হয়ে পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, নৌ-যান সংকট। সময় মতো বোট না পাওয়ায় এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে যাত্রীরা। অচল হয়ে পড়ে কস্তুরাঘাট কেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য। তবে কৌশলে কস্তুরাঘাট অচল রাখা হয় বলে অনেকের অভিযোগ।

কক্সবাজার পৌর মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, ‘ঘাটের দু’পক্ষের কোন্দলের কারণে কস্তুরাঘাট বন্ধ হয়ে যায়। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এতদিন কোন উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। অনেক চেষ্টা করে ঘাটটি সচল করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, আবহাওয়া ভাল থাকলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হবে। কস্তুরাঘাট জেটিকে আধুনিক ও উন্নতমানের করতে সব ধরণের চেষ্টা করা হবে।


শেয়ার করুন