কপালে যুদ্ধের ক্ষত নিয়েই জন্ম শিশুটির

Toll-of-Syria  

সিটিএন বিশ্বজুড়ে:

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার আলেপ্পো নগরের একটি হাসপাতাল। শরীরে বোমার ক্ষত নিয়ে ভর্তি হন নয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা আমিরা। সেখানেই জন্ম দেন এক মেয়ে শিশুর।

যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচার লড়াইয়ে জিতে পৃথিবীতে বিজয় পতাকা উড়ায় শিশুটি। তবে যুদ্ধের তাণ্ডব যেন পোড়া কপালের মতোই শিশুটির কপালে এঁকে দিয়েছে ক্ষতচিহ্ন। কপালে বোমার ক্ষত নিয়েই পৃথিবীতে পথচলা শুরু হয় শিশুটির।

এতো কিছুর পরও বেঁচে থাকার চরম সার্থকতায় মেয়েটির নাম রাখা হয়েছে আমেল, যার বাংলা অর্থ আশা।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ঐতিহাসিক শহর আলেপ্পোতে তিন সন্তান নিয়ে থাকতেন আমিরা। আরেক সন্তানের আগমনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আমিরার ও আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে সরকারি আসাদ বাহিনী বোমা হামলা চালায় বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসকরা মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএনকে জানিয়েছেন।

আহত আমিরা ও তার তিন সন্তানকে সঙ্গে সঙ্গে পাশ্ববর্তী হাসপাতালে আনা হয়।

হাসপাতালের মুখপাত্র আবু লুয়ি জানান, আমিরার তিন সন্তান সামান্য আহত হলেও তার মুখে ও শরীরে বোমার বেশ কয়েকটি জখম ছিল। তিন সন্তান মাঝে বসা বিধ্বস্ত আমিরার পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ঝরছিল।

আমিরা ও তার গর্ভের সন্তানের জীবনের শঙ্কায় চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।

তবে চিকিৎসকরা কল্পনাও করেননি অনাগত শিশুটি বোমার ক্ষত নিয়ে জন্ম নেবে। শিশুটির বাম চোখের একটু উপরে কপালের ওই ক্ষততে বিদ্ধ হয়ে ছিল বোমার টুকরো। মায়ের পেট ভেদ করে শিশুটির কপালে বিদ্ধ হয় বোমার টুকরোটি। চিকিৎসকরা অবশ্য শিশুটির কপাল থেকে বোমার টুকরোটি অপসারণ করেছেন।

চিকিৎসকরা জানান, মা শিশুটিকে, নাকি শিশুটি মাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ভয়ংকর ওই বোমার টুকরোটি মা-শিশু দুজনকেই মেরে ফেলতে পারতো। চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় আমিরা ও তার শিশু হয়তো বেঁচে গেল।

সিরিয়ায় ২০১১ সালের মার্চে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরবর্তীতে তা রূপ নেয় গৃহযুদ্ধে। চলমান এই সংঘাতে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দেশের ভেতরে ও বাইরে বাস্তুহারা হয়েছেন ৪০ লাখ মানুষ। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে দেখা দিয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়।

 


শেয়ার করুন