কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হলেন মাবু

Mabuশাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:
অবশেষে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হলেন পৌর ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মাবু। সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন পত্রে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কয়েকদিনের অনেক নাটকীয়তার পর তিন প্যানেল মেয়রকে টপকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের চেয়ার দখল করতে সক্ষম হয়েছেন মাহবুবুর রহমান মাবু।
প্রেরিত প্রজ্ঞাপন পত্রে বলা হয়েছে, কক্সবাজার পৌরসভার ১নং প্যানেল মেয়র জিসান উদ্দিন ও ২নং প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা থাকায় তাদের দ্বারা পৌর মেয়রের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোন থেকে সমীচিন নয়। এ ছাড়া প্যানেল মেয়র ৩ কহিনুর ইসলামসহ পৌরসভার অন্য ১০ কমিশনার মাহবুবুর রহমানকে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের অবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কক্সবাজার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে দায়িত্ব প্রদান করা হলো।

জানা গেছে, দায়িত্ব গ্রহণের প্রাক্কালেই চকরিয়ায় সংঘটিত একটি রাজনৈতিক ঘটনার মামলা আসামী হয়ে যান জিসান উদ্দীন। একই মামলায় রফিকুল ইসলামও আসামী হয়ে যান। একইভাবে অনুমতি ছাড়া বিদেশ গমণের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। দু’জনই ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দীন আহমেদকে দেখতে গিয়েছিলেন। মূলত এই দু’ অভিযোগে জিসান উদ্দীন ও রফিকুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পদ থেকে ছিটকে পড়েছেন। একই সাথে জিসান উদ্দীনকে অনাস্থা জানিয়ে তাকে দায়িত্ব না দিতে ১০ জন কাউন্সিলর এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছেন। ৩ নং প্যানেল মেয়র কুহিনুর ইসলামও মাহবুবকে সমর্থন করেন। এসব বিষয় মাহবুবকে চেয়ারে বসাতে কাজে এসেছে।
স্থানীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছিলেন, কক্সবাজার একটি গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভা হওয়ায় সরকার এই পৌরসভা নিয়ে জটিলতা ঝুলিয়ে রাখতে চাইনি। তাই সিদ্ধান্ত তাড়াতাড়ি নেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষাপটে সবকিছু বিবেচনা করে মাহবুবকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মাহাবুবুর রহমান মাবু বলেন, ‘ আমি নিয়মতান্ত্রিকভাবে দায়িত্ব পেয়েছি। এখন আমার স্বপ্ন পৌরসভার উন্নয়ন করা। সে লক্ষে আমি আমার ১৩ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে পুরো পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। এই জন্য আমি পৌরবাসীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
প্রসঙ্গত, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে ২০১৩ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরে জামায়াত-শিবির ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়। ওই ঘটনায় কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র সরওয়ার কামালসহ ২৭৩ জনকে আসামী করে ৩টি পৃথক মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে গত ১২ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার এর আদালতে উক্ত মামলার চার্জ গঠন করা হয়। এর ফলে ২৪ নভেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র সরওয়ার কামালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি প্রজ্ঞাপনে ৩ দিনের মধ্যে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ৩১(২) উপ ধারা অনুযায়ী প্যানেল-১ এর বরাবরে দায়িত্ব হস্থান্তরের জন্য বরখাস্তকৃত মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। সে অনুযায়ী প্যানেল মেয়র (১) জিসান উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালনের আগ মুর্হতে প্যানেল মেয়র জিসান উদ্দিন ও কাউন্সিলর রফিকের বিরুদ্ধে কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। যে কারণে প্যানেল মেয়র ১ ও ২ জনই ভারপ্রাপ্ত মেয়রের চেয়ারে বসতে পারেননি।


শেয়ার করুন