কক্সবাজার পর্যটক বরণে প্রস্তুত

কোন শঙ্কা ছাড়াই জোর প্রস্তুতি নিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। আবহাওয়া ভাল থাকলে বিপুল সংখ্যার পর্যটকের আগমন ঘটবে কক্সবাজারে এমনটি মনে করছেন ব্যবসয়িরা। ঈদুল আযহা’র ছুটিতে প্রতিবারই পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে সমাগম হয় লাখো পর্যটকের। তবে এবারের ঈদুল আযহা’র ৬ দিনের লম্বা ছুটির কারণে ভিন্নমাত্রা যোগ হচ্ছে। এবারের ঈদে সরকারি ছুটি ৬ দিনের।
পর্যটক বরণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। এ ছাড়াও পর্যটকদের পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। এদিকে পর্যটকরাও উদগ্রীব ্হয়ে আছেন কক্সবাজার আসতে। ইতোমধ্যেই অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পর্যটন এলাকাগুলোর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো সাজানো হচ্ছে নানা আকর্ষণীয় সাজে। সর্বত্র চলছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। পুরনো জিনিসপত্র ধুয়ে মুছে আর একটু আকর্ষনীয় করে তোলার কাজ চলছে এখন। রেস্তোরাঁগুলোতেও চলছে ধুয়ামোছা ও রং লাগানোর প্রতিযোগিতা। প্রশাসনের পক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হোটেল-মোটেলেও অগ্রিম বুকিং চলছে।
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্ত্বায় জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে শক্তিশালী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি মাঠে থাকবে সাদা পোষাকধারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সমুদ্রে গোসল করতে নামা পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত আছে লাইফগার্ড কর্মীরা। কোন পর্যটক যাতে ‘বিপদ সীমা’ অতিক্রম না করে, সেজন্য সাগর
তীরে বসানো হয়েছে বিশেষ সতর্ক চিহ্ন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ সুত্রে জানা যায় শহরের লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, কবিতা চত্ত্বর, শাহীন চত্ত্বর, দরিয়া নগর, ইনানীতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ১২৬ জন সদস্য তিন শিফ্টে ২৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করবে। জেলা পুলিশের সাথে সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করা হবে।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর সভাপতি এম. রেজাউল করিম রেজা জানান, কক্সবাজারে আসা দেশী বিদেশী পর্যকদের ভ্রমন আনন্দময় করতে আমরা নিজস্ব গাইড দিয়ে সহায়তা করব।
কক্সবাজারের তারকা মানের হোটেল সি-গালের ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজার নূর-এ-আলম জানান, অতীতের বিষয়টি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিবছর ঈদের ছুটিসহ নানা ছুটিতে ব্যাপকসংখ্যক পর্যটকের ভিড় হয় কক্সবাজারে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। অন্য বারের চেয়ে এবার সাড়া পড়েছে বেশী। ইতোমধ্যে অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
হোটেল দি কক্স টুডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আবু তালেব শাহা জানান, ৬ দিনের ছুটি কোন অংশে কম নয়। এছাড়াও বিগত সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটকের সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু এখন সবকিছুই অনুকূলে রয়েছে। যার ফলে ইতোমধ্যে হোটেলের ৮০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। আজ থেকে আসতে শুরু করবে পর্যটক।
অন্যদিকে হোটেল-মোটেল জোনের প্রায় প্রতিটি হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসে চলছে সাজসজ্জার কাজ। একটু রাঙিয়ে নেওয়া হচ্ছে প্রতিটি হোটেল-মোটেল। এছাড়া জেলা সদরের বাইরেও পর্যটন স্পট মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী, দরিয়ানগর, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো সাজছে নতুন করে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী জানান, পর্যটকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। টুরিষ্ট পুলিশের সাথে সমন্বয় করে জেলা পুলিশ কাজ করবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক ও বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতি মো. আলী হোসেন বলেন, পর্যটন শিল্পবিকাশে এবারের ঈদে পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আগাম সতর্কাদেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে করে কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হয় এবং স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারে। সেজন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন