কক্সবাজার ছেড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে মালয়েশীয় ত্রাণবাহী জাহাজ

malaysian_relife_ship_pic_39391_1486989870মিয়ানমারে সেনা-পুলিশের নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের জন্য মালয়েশিয়া সরকারের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী কক্সবাজার থেকে গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

সোমবার দুপুরের দিকে মালয়েশিয়ার ত্রাণবাহী একটি জাহাজ কক্সবাজারের মহেশখালী চ্যানেলে নোনিয়াছড়া পয়েন্টে পৌঁছে নোঙ্গর করলেও বিকালে তা চট্টগ্রামে ফিরে গেছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, পূর্ব সিডিউল অনুযায়ী ত্রাণবাহী জাহাজটি কুতুবদিয়া বহিঃসমুদ্রে নোঙ্গর করার কথা ছিল। কিন্তু যোগাযোগ সুবিধার্থে তা মহেশখালী চ্যানেলের নোনিয়ারছড়া বিএমডাব্লিউ ঘাট পয়েন্টে সোমবার সকালের দিকে নোঙ্গর করে। কথা ছিল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ত্রাণগুলো বুঝে নিয়ে খালাস করবে জেলা প্রশাসন। কিন্তু আবারো সিদ্ধান্ত বদলানো হয়েছে। বিকালেই জাহাজটি নোঙ্গর তুলে চট্টগ্রাম পোর্টের দিকে গেছে। সেখান থেকেই মালামালগুলো খালাস করা হবে।

এর আগে এই জাহাজটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে মিয়ানমারে গিয়েছিল। এসময় জাহাজটি মিয়ানমারের প্রতিবাদের মুখে পড়ে।

এরপরও মিয়ানমারে ৫০০ টন ত্রাণ নামিয়ে, বাকি ২ হাজার ২০০ টন ত্রাণ বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে।

সোমবার জাহাজটি কক্সবাজার নোঙ্গর করার পর আবার চট্টগ্রাম বন্দরের দিকে চলে গেছে। বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নোঙ্গর করা জাহাজ থেকে লাইটার জাহাজে করে আনা ত্রাণসামগ্রী ট্রাকে করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য নেয়া হবে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা (আইওএম) এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এসব ত্রাণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিতরণ করবে। আইওএম’র কক্সবাজারের এক কর্মরতা নাম না প্রকাশের শর্তে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমার মংডু সীমান্তে বিজিপির তিনটি পুলিশ ক্যাম্পে দুর্বৃত্ত হামলা হয়। সেখানে ৯ জন পুলিশ সদস্য মারা যায় এবং বেশ কিছু অস্ত্র লুট হয় বলে দাবি করে মিয়ানমার সরকার।

এর পরই অপরাধীদের আশ্রয় দেয়া এবং হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাখাইন রাজ্যের বেশ কয়েকটি গ্রামে সেদেশের সেনা ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে পৈশাচিকতা চালায়। এতে অগণিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। পুড়িয়ে দেয়া হয় অসংখ্য বাড়িঘর। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।

নব্বই দশকের শুরু থেকে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত মিলে আরো চর-পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে।


শেয়ার করুন