কক্সবাজারে বিশ্ব পর্যটন দিবস পালিত

দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে মঙ্গলবার সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়েছে বিশ্ব পর্যটন দিবস। এবার দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে। ইতিমধ্যে চলতি বছরকে সরকার পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করায় বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবার ব্যাপক কর্মসুচি হাতে নেওয়া হয়। যদিও বিশ্ব পর্যটন দিবসে পর্যটকের সমাগম কম রয়েছে। তবু দিবসটি নিয়ে কক্সবাজার সাগরপাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাসের কমতি ছিল না।

‘টুরিজ্যম ফর অল-প্রোমোটিং ইউনির্ভাসেল এক্সেসসিবিলিটি’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে করে এবার বিশ্ব পর্যটন দিবস উদযাপিত হচ্ছে। বিশ্বের দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতপাড়ের শহর কক্সবাজারে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সাগরপাড়ের সুগন্ধ্যা পয়েন্ট থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে শেষ হয় লাবণী পয়েন্টের সৈকতে। জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনের নেতৃত্বে এ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সরকারি কর্মকর্তা, ট্যুরিস্ট পুলিশ, হোটেল-মোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সৈকতের পর্যটন ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

শোভাযাত্রা শেষে সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব পর্যটন দিবসের আলোচনা সভা। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কক্সবাজার সী বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী, কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বী, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা রেজাউল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজি আবদুর রহমান অন্যান্যরা বক্তব্য দেন। সকাল ১১টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে সৈকতের কিটকটের (পর্যটন ছাতা-চেয়ার) উপর শিশু শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।

বিশ্ব পর্যটন দিবসের আকর্ষণীয় পর্বের আয়োজন করা হয় বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে। সেখানে গান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা। এ ছাড়া স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় গান, নৃত্য, রাখাইন নৃত্য এবং কৌতুক দৃষ্টি কাড়ে দর্শকদের। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন এসব প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠকে বলেন, “সরকার চলতি বছরকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করেছে। এ কারণে এ বছরের বিশ্ব পর্যটন দিবসটি আমাদের জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ।”

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, “বাস্তবে পর্যটন বলতেই কক্সবাজারের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। মানুষ কক্সবাজারে যেহেতু ভ্রমণে আসতে চান, সেহেতু এখানে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকেই সবচেয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বর্তমানে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছেন ১৩৭ জন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য। তদুপরি জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি মোবাইল টিম সার্বক্ষণিক সৈকতে রয়েছে। এ ছাড়া পর্যটকদের যে কোনো বিষয়ে প্রশাসনিক সহযোগিতার জন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষে একটি ফেইসবুক ওয়েব ‘ম্যাজিষ্ট্রেটস ডট কক্সবাজার সী বীচ’ খোলা হয়েছে।” জেলা প্রশাসক এ ফেসবুকের মাধ্যমে কক্সবাজার সৈকতে সহযোগিতা নেওয়ার জন্য দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।


শেয়ার করুন