কক্সবাজারসহ ২৬ জেলায় ১০ দিনের বাড়তি সতর্কতা

সিটিএন ডেস্কঃ
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে দেশের ২৬ জেলায় বাড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যা আজ বুধবার (২০ অক্টোবর) থেকে ১০ দিন বহাল থাকবে বলে জানা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সদস্যদের বাড়তি সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কুমিল্লায় মন্দিরে ‘পবিত্র কোরআন অবমাননার’ ঘটনার সূত্র ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে সহিংসতা হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য নানা ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) পুলিশ সদরদপ্তরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং ঈদে মিল্লাদুন্নবী, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্মী পূজা ও বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমাকে সামনে রেখে এই বাড়তি সতর্কতার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের কর্মকর্তারা।

বাড়তি সতর্কতার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে ধাপে ধাপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি কমিয়ে আনা হবে বলে জানা গেছে। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে না হলে সতর্কতার সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে।

সতর্কতা জারি করা জেলায়গুলোর থানা এলাকায় টহল, গোয়েন্দা নজরদারি, সাইবার মনিটরিং বাড়ানোর পাশাপাশি বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিয়ন, গ্রামে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতে কথা বলা হয়েছে। এই কাজে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করার পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

যে ২৬ জেলায় বাড়তি সতর্কতা

দেশের যে ২৬ জেলায় বড়তি সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- রংপুর বিভাগের ৭টি জেলা। সেগুলো হলো- পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী।

খুলনা বিভাগের জেলা রয়েছে ৫টি। সেগুলো হলো- বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ।

যে জেলা থেকে ঝামেলার শুরু, সেই কুমিল্লা ছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগে রয়েছে- চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী ও কক্সবাজার।

ঢাকা বিভাগে- শরীয়তপুর, মাদারীপুর, নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

সিলেট বিভাগের ৪ জেলার মধ্যে- সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ কেন্দ্রিক অপ্রীতিকর ঘটনায় এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা হয়েছে। আরও কিছু মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সারা দেশে ইতোমধ্যে ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।

কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন জেলায় মন্দির ও বাড়িঘর ভাঙচুর এবং হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ৭১টি মামলায় আসামির সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।

গতকাল মঙ্গলবার র‍্যাব সদরদপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘অন্যান্য বছর দেশের কোনো পূজামণ্ডপে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। কিন্তু এবার দেখছি এমন কিছু ঘটনা ঘটে গেলো, আসলে এসব ঘটানো হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু উগ্র মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। সেখানে পুলিশকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হয়েছে। সেখানে ৪ জন মারা গেছেন। আজ (মঙ্গলবার) আরেকজন মেডিকেলে মারা গেছেন।


শেয়ার করুন