এসডিজি বাস্তবায়নে বৈষম্য কমাতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

120902_1সিটিএন ডেস্ক :

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (সাসটেনবল ডেভেলপমেন্ট গোল-এসডিজি) বাস্তবায়ন করতে হলে অপেক্ষাকৃত গরিব দেশগুলোর প্রতি সহযোগিতা বাড়াতে এবং ধনী-গরিবের বৈষম্য কমাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও খাদ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে।

শনিবার সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক অগ্রগতি সংক্রান্ত আলোচনা সভা ‘ইন্টারেক্টিভ ডায়ালগ অন সাস্টেইনেবল ইকনোমিক গ্রোথ’-এ কো-চেয়ার হিসেবে অংশ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের কাছে এসব দাবি জানান শেখ হাসিনা।

এতে কো-চেয়ার হিসেবে অংশ নেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মাইকেল।

জনগণের উন্নত জীবনমানের নিশ্চয়তায় বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

এসডিজি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে শেখ হাসিনা দরিদ্র দেশগুলোর খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবনমানের নিশ্চয়তায় ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উপস্থিত সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় দরিদ্র দেশগুলো প্রযুক্তিগত সুবিধা থেকে অনেক পিছিয়ে। তাই ধনী ও গরিব দেশগুলোর মধ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সুষম ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমার জন্ম বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে। সেখানেই আমি বেড়ে উঠেছি। আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তার স্বপ্নের দেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানে আজকে তিনি জাতির পিতা। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সংরক্ষণে বঙ্গবন্ধু কেবল জনগণকে স্বপ্নই দেখাননি, বাস্তবায়নেও কাজ করে গেছেন। তাই আমি আবারও বলব, এসডিজি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।

রিপাবলিক অব চায়না এবং জাতিসংঘের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে অংশ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

120902_1

এতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে নিজ নিজ দেশের পক্ষে কথা বলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর নওয়াজ শরীফ, মিসরের সেনা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসিসহ এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং প্রতিনিধিগণ।

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি অ্যাওয়ার্ড তরুণদের উৎসর্গ

এদিকে, দেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পেয়েছেন আইসিটি পুরস্কার।

ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) পক্ষ থেকে দেওয়া আইসিটি সাসটেনবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন তিনি। আর পুরস্কার হাতে নিয়ে তা উৎসর্গ করলেন দেশের তরুণ সমাজকে।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় আইটিইউ’র মহাসচিব হুলিন ঝাও এই পুরস্কার তুলে দেন শেখ হাসিনার হাতে। জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পুরস্কারজয়ীদের সম্মানে আয়োজন করা হয় বিশেষ নৈশভোজেরও।

বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান, জাতিসংঘের বর্তমান ও অতীতের নেতৃত্ববৃন্দও এই পুরস্কারের তালিকায় রয়েছেন।

পুরস্কার গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার অব্যাহত প্রচেষ্টার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

আইটিইউকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরস্কৃত হয়ে আমি গভীরভাবে সম্মানিত বোধ করছি।’

বাংলাদেশের যুব শ্রেণিকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করে তিনি বলেন, তার সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে তথ্য-প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে, যাতে একজনও পিছিয়ে না থাকে। একটি টেকসই উন্নত ভবিষ্যত বিনির্মাণে সবাইকে হাতে হাত ধরে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।


শেয়ার করুন