এবার তালিকা হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীদের

162632_1-400x209সিটিএন ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বেতনভুক্ত রাজাকারদের খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।এ বিষয়ে দেশের সব বিভাগীয় কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে সরকার। সোমবার স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাসছুদা ইয়াসমিন এই চিঠি পাঠান।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীনতাকামীদের দমনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এ দেশের নাগরিকদেরকে নিয়ে গঠন করে রাজাকার বাহিনী যার বেশিরভাগই ছিল জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী। ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনায় প্রথম গঠন করা হয় এই বাহিনী। পরে সারাদেশেই গঠন করা হয় এই বাহিনী। সদস্যদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাধীনতাকামীদের দমনে কাজে লাগায় পাকিস্তানি বাহিনী। এদেরকে নিয়মিত বেতন-ভাতাও দেয়া হতো। এ কারণে তাদের তালিকা ছিল থানায় থানায়। একইভাবে স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে গঠন করা হয় আল শামস বাহিনী।

মুক্তিযুদ্ধের পর এই তালিকা ধরে রাজাকারদের গ্রেপ্তার শুরু হয়। দালাল আইনে এদের বিচারও চলতে থাকে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দালাল আইন প্রত্যাহার করে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারের মুখোমুখি আসামিদের ছেড়ে দেয় তৎকালীন সরকার। আর রাজাকারদের এই তালিকাও নষ্ট করে ফেলা হয় কোথাও কোথাও।

তবে সরকার মনে করছে, স্বাধীনতাবিরোধীরা তালিকা নষ্ট করার চেষ্টা করলেও কোথাও না কোথাও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির কাছে তা সংরক্ষিত থাকতে পারে।
গত ২ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মনস্ত্রণালয় থেকে ১৯৭১ সালে বেতন ও অস্ত্রপ্রাপ্ত রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের তালিকা সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে এই তালিকা সহায়ক হবে বলে মনে করছে সরকার। তালিকা সংগ্রহকে সময় বেঁধে দেয়া না হলেও যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ সফল হলে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনায় সহায়ক হবে বলে মনে করছে সরকার।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের যেমন তালিকা আছে, তেমনি স্বাধীনতাবিরোধীদেরও তালিকা করা হবে। এ জন্যই আল বদর, আল শামসদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে’।
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের একটা তালিকা ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওই তালিকা সুকৌশলে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। থানাগুলোতে অল্পসংখ্যক তালিকা আছে, আমরা তালিকা করার পদক্ষেপ নিয়েছি। এ গুলো পাঠাতে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে’।

স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হোসেন খান বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে ১৯৭১ সালে বেতন ও অস্ত্রপ্রাপ্ত রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের তালিকা তৈরি করা সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে এবং তা বিভাগীয় কমিশনারদের পাঠিযেছি।
জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার জিল্লার রহমান বলেন, ‘চিঠিটি এখনও হাতে পৌঁছেনি। হাতে পেলেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ শুরু করবো’। সূত্র-ঢাকাটাইমস


শেয়ার করুন