‘এটা কোন দেশ?’

আরটিএনএন:

ঢাকা: ‘দ্যাশে তো আইন-কানুন আছে। অপরাধ করলে তার শাস্তি হইবে। তাই বইল্লাহ কি বিচার ছাড়াই পুলিশ একটা মানুষ মাইররা হালাইবে। এহন মুই দুইডা নাতিনি ও পোলার বউ নিয়া কই যামু। ওরে আল্লাহরে, আমার টিপুরে ফিরাইয়া দেন।’

কথাগুলো বলতে বলতে বাকরুদ্ধ হয়ে যান রিজিয়া বেগম (৬৯)।

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই আহাজারি করছিলেন পুলিশের সাথে  কথিত বন্দকযুদ্ধে নিহত বরিশালে আগৈলঝাড়া উপজেলার ছাত্রদলের যু্গ্ম সম্পাদক টিপু হওলাদারের (৩৫) মা রিজিয়া বেগম।

সংবাদ সম্মেলনে টিপু হওলাদারের স্ত্রী সোমা আক্তার বলেন, আমরা জানতে পারি ১৯ ফেব্রুয়ারি ডিবি পুলিশ ঢাকা থেকে টিপুকে আটক করে হাজারিবাগ থানায় নিয়ে গেছে। পরদিন সকালে তাকে আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ খবর শুনে শাশুড়িসহ আগৈলঝাড়া থানায় গেলে পুলিশ বলে টিপু এখানে নেই। তারপর থানার দারোগা আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২০ তারিখ শুক্রবার রাত ২টার দিকে থানার পাশে ৮-১০টা গুলির শব্দ পাই। পরদিন সকাল বেলা শুনতে পাই টিপু ও জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির মোল্লা (৩০) ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন।

‘একটি গাড়ি পোড়ানোর  মিথ্যা  মামলায় এভাবে পুলিশ একজনকে গুলি করে হত্যা করতে পারে। এটা কোন দেশ?’ প্রশ্ন সোমা আক্তারের।

টিপু হওলাদারের স্ত্রী বলেন, আমার তিন বছরের মেয়ে হাফসা ও তিন মাস বয়সী আফরোজাকে নিয়ে এখন কোথায় যাব। তাদের আমি কেমন করে মানুষ করব।

এসময় তিনি তার স্বামীর হত্যার সঠিক বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে টিপু হওলাদারের শ্বাশুড়ি নুরন্নাহার বেগমও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মধ্যরাতে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাইবাস সড়কের কুয়াতিরপাড়ে পুলিশের সাথে  কথিত বন্দুকযুদ্ধে বরিশালে আগৈলঝাড়া উপজেলার ছাত্রদলের যু্গ্ম সম্পাদক টিপু হওলাদার (৩৫) ও জাসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির মোল্লা (৩০) নিহত হয়।


শেয়ার করুন