এখনো সাড়ে ৪ কোটি সিম অনিবন্ধিত

sim-p1আঙ্গুলের ছাপ বা বায়োমেট্রিক পদ্ধতিত সিম নিবন্ধনের সময়সীমা শনিবার শেষ হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা বলছেন বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৮ কোটি ৩৮ লাখ সিম রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে। সরকারি হিসেবে দেশে মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৩ কোটির কিছু বেশি। এখনও সাড়ে ৪ কোটির বেশি সিম রেজিষ্ট্রেশন বাকি আছে। এই সময়সীমা বাড়ানো হবে কিনা সেটি শনিবার জানানোর কথা রয়েছে।

সিম রেজিষ্ট্রেশনের বিষয়ে বিবিসি বাংলার সঙ্গে কথা বলেন এসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর অব বাংলাদেশ (এমটব)’র সাবেক মহাসচিব ও তথ্য প্রযুক্তিবিদ আবু সাঈদ খান। তিনি বলেন, সিম নিবন্ধনের জন্য দুটো বিষয় আছে, একটা হল অনেক গ্রাহক আছেন যাদের একাধিক সিম আছে তাদের মধ্যে অনেকেই ভাবছেন একাধিক সিম পুনঃনিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। বাড়তি সিম ব্যবহার করবেন না।
তিনি বলেন, আরেকটি দিক হচ্ছে যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এই কাজটি করা হচ্ছে সেটা আজকের দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে এই বাধ্যবাধকতার কোন বাস্তব কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। আমরা দেখেছি সরকার আয়কর দেয়ার মতো জটিল বিষয়গুলোর সময়সীমা অতীতে বাড়িয়েছে এবং সব সময় বাড়িয়ে থাকে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সরকার যথেষ্ট সংবেদনশীলতার সঙ্গে এই বিষয়টি দেখছেন এবং সরকার সিম নিবন্ধনের সময় অবশ্যই বাড়াবেন।
সাধারণ গ্রাহক যারা সিম নিবন্ধন করছেন তারা কি সুবিধা পাবেন এ প্রসঙ্গে সাঈদ খান বলেন, সিম নিবন্ধন করলে গ্রাহকরা কি সুবিধা পাবেন এটা ব্যাখ্যা করা সরকারের দায়িত্ব। আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি সরকার জনগণের কাছে এখন পর্যন্ত স্পষ্টভাবে তুলে ধরছে না এর সুবিধার বিষয়টি। তবে আমি মনে করি গ্রাহকদের ওপর সরকার যেভাবে পুনঃনিবন্ধন প্রক্রিয়া চাপিয়ে দিয়েছে ঠিক একইভাবে সরকারের উচিত হবে মোবাইল অপারেটরদেরকে একটি সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে সেবার নুন্যতম মান ঠিক করে দেয়া এবং তাদেরকে বাধ্য করা যে এই নুন্যতম সেবার মান দিতে হবে। কেন না আমরা সবাই জানি বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের সেবার মান বর্তমানে অত্যন্ত খারাপ। এই নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। সেবার মানটা সরকার সুনিশ্চিত করতে পারলে গ্রাহকরা এতো কষ্ট করে সিম পুনঃনিবন্ধন করছেন সেটা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
এত প্রচারণার পরেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব সিম পুনঃনিবন্ধন করা শেষ হয়নি এর কারণ সম্পর্কে প্রযুক্তিবিদ সাঈদ খান বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা কঠিন। এখানে অনেকগুলো বিষয় আছে, বর্তমানে সারাদেশে ১ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ ঘাটতি চলছে। অনেক জায়গায় বিদ্যুতের সরবরাহ নেই। আমরা গ্রামে-গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে সিম নিবন্ধনের যে প্রক্রিয়া যে কম্পিটারের মধ্য দিয়ে এটা করা হচ্ছে সেগুলো কতখানি সচল আছে সেটা একটা দিক।
আরেকটা দিক হলো নির্বাচন কমিশনের যে সার্ভারটা আছে সেটা একসঙ্গে এতগুলো হিট নেবার মতো সক্ষমতা আছে কিনা সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। এ বিষয়টিকে কেউই স্পষ্ট করে বলছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে সবাই বলার চেষ্টা করছে সব কিছু ঠিক আছে। এখানে কারগরি দিক, সামাজিক দিক, মানুষের সুবিধা-অসুবিধা, বিভিন্ন অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা সব কিছুকে আমাদের আমলে নিতে হবে। কোন একটা বিশেষ দিকে আলোকপাত করা ঠিক হবে না।
সূত্র: বিবিসি বাংলা


শেয়ার করুন