এক মন্ত্রী মহাসড়কে গিয়ে গলা ফাটিয়ে বেড়ান

14319_77654নাম উল্লেখ না করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কড়া সমালোচনা করলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

তিনি বলেন, “একজন মন্ত্রী সড়ক-মহাসড়কে গিয়ে গলা ফাটিয়ে বেড়ান। মহাসড়ক পরিষ্কার করবেন। কিন্তু এ ঘটনাতো অনেক আগে থেকেই। এতো দিন কোথায় ছিলেন? নছিমন, করিমনসহ সব তিন চাক্কাই চলে। প্রতিদিন নিউজ হচ্ছে আপনি কি দেখেন না। বরং আগের চেয়ে ভাড়া বাড়ছে দ্বিগুণ। আপনি সব সড়ক চারলেন করবেন। কিন্তু চিটাগাং রোডই এখন পর্যন্ত চারলেনের কাজ শেষ করতে পারলেন না।”

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে চলমান রাজনীতি বিষয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিশু হত্যার কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে এমন মন্তব্য করে সুরঞ্জিত বলেন, “কী বীভৎস উপায়ে ও বিকৃত চিন্তায় শিশু হত্যা হচ্ছে। শিশু হত্যা হতে পারে কিন্তু বিকৃত চিন্তায় শিশু হত্যা হবে কেন? এটি শঙ্কার বিষয়। এতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মানুষ আশা করবে কোথায়!”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া সমালোচনা করে সুরঞ্জিত বলেন, “সিলেটে রাজন হত্যার পর আসামি পালিয়ে সৌদি আরবে যায়। আর পুলিশ নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়। পরে সৌদি আরবে আমাদের যুবকরা তাকে ধরে পুলিশে দিলো। শুনলাম দু’একদিনের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের আসামি নূর হোসেন পালিয়ে গেলেন। আজ পর্যন্ত দেশে ফিরিয়ে আনতে পারেনি সরকার। এটা হতে পারে না।”

এসব হত্যার সঙ্গে যে পুলিশ সদস্য সহযোগিতা করেছেন তারাও সমান অপরাধী। তাদেরও বিচার করতে হবে বলেও দাবি করেন এই প্রবীণ রাজনীতিক।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনি দিন-রাত পরিশ্রম করবেন। আপনি সব কিছু করবেন। নিম্ন থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করবেন। তাই আইন-শৃঙ্খলাকেও মধ্যম সারিতে নিয়ে আসবেন। পুলিশ নেবেন হাজার হাজার। আর বিচারক নেবেন না। দেশে মামলার জট দিন দিন বাড়ছেই। হবে কী করে। দেশের দেড় লাখ মানুষের জন্য একজন বিচারক। একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটি হয় না। আপনাকে পুলিশ ও বিচারক দুটিই নিতে হবে। এ বিষয়গুলো আপনাকে দায়িত্ব নিয়েই করতে হবে।”

একটি জাতীয় দৈনিকের বরাদ দিয়ে সুরঞ্জিত সেন বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করেছে। একটি সুচিন্তিত একটি সংগঠন। তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি নিয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী, এমপি ও সংসদের হুইপ।’ তারা যে অভিযোগটি করেছেন এটা অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর হতে পারে না।”

তিনি বলেন, “এটি যদি সত্যি হয়, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। নিজেকে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল দাবি করে স্লোগান দেবেন আর রক্ষকই ভক্ষক হবেন। সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে ক্ষমতাভোগীরা সম্পত্তি নিয়ে যাবেন। এটা আরো বেশি দুঃখজনক। এ অভিযোগ রাষ্ট্র ও সরকারের দিকে যায়। এনিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করবে। এর বিচার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ কিভাবে হয় তা বুঝতে হবে। তাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শেষ ভরসা স্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব দায়-দায়িত্ব তাকেই নিতে হবে। দীর্ঘ দিনের চিন্তা ও আচরণের মধ্য দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা তৈরি হয় বলেও জানান সুরঞ্জিত।

ঢাকাটাইমস

শেয়ার করুন