উখিয়া উপকুলে জেলে পরিবারের সীমাহীন দুর্দিন

শফিক আজাদ, উখিয়া:
সরকার ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য মার্চ, এপ্রিল এ দুই মাস সাগরে মাছ ধরার প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বেকার হয়ে পড়েছে উপকুলের প্রায় ৫ হাজার পেশাদার জেলে। এরফলে বন্ধ হয়ে গেছে মৎস্য ঘাট, মাছ বেঁচাকেনা সহ সকল কার্যক্রম। থেমে গেছে উপকুলের মৎস্যজীবীদের অবাধ বিচরণ। এমতাবস্থায়, জেলেদের অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করতে হচ্ছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলে পরিবারগুলোতে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্দিন। গতকাল রবিবার উপকুলের সোনারপাড়া, ইনানী, সোয়ানখালী ঘুরে জেলেদের নিকট জানতে চাওয়া হলে এসব অভাব অভিযোগের কথা উঠে আসে।
জানা গেছে, কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকুলীয় এলাকায় মৎস্যজীবীদের আইডি কার্ড সরবরাহের মাধ্যমে সরকারিভাবে জেলেদের সাহায্য সহযোগীতা অব্যাহত থাকলেও উখিয়া উপজেলার উপকুলীয় এলাকার জেলেরা সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। সাগরে নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারিভাবে তেমন কোন সাহায্য সহযোগীতা না পাওয়ার কারণে জেলেদের দিন যাচ্ছে অভাব অনটনে। এ সময় জেলেরা তাদের জাল, নৌকা ও ট্রলার সহ মাছ ধরার যাবতীয় সরঞ্জাম মেরামত করে সময় পার করলেও অনেকের বাড়িতে জুটছে না দুবেলা দুমোঠো খাবার। সোয়ানখালী এলাকার পেশাদার জেলে আব্দুর রহিম (৩৮) এর সাথে আলাপ করে জানতে চাওয়া হলে সে জানায়, ইলিশের অভয়াশ্রমে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ। তাই বেকার সময় কাটাতে হচ্ছে। ঘরে কিছু জমানো টাকা থাকলেও দৈনিক উপার্জন না থাকায় তাও খরচ হয়ে গেছে। এমতাবস্থায়, ছেলেমেয়ে নিয়ে কিভাবে দিন কাটাব তা বলা যাচ্ছে না। ইনানী এলাকার ফিশিং বোটের মাঝি আলী আকবর (৪২) জানান, ২০১৪ সালের শেষের দিকে উপজেলা মৎস্য বিভাগ স্থানীয় জেলেদের তালিকা প্রণয়ন করলেও আইডি কার্ড দেওয়া হয়নি। যে কারণে তারা মৎস্য আহরণে নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগীতা পাচ্ছে না। এভাবে উপকুলের একাধিক জেলে তাদের অভাব অভিযোগের কথা তুলে ধরে সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগীতা পাওয়ার দাবী জানান। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা একেএম শাহরিয়ার নজরুল জানান, জেলেদের তালিকা তৈরি করে তাদেরকে আইডি কার্ড সরবরাহ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মৎস্য আহরণ বন্ধ ঘোষণার সময়ে জেলেদের সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগীতার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি এ ব্যাপারে সন্তুষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তবে আগামীতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বস্থ করলেন।


শেয়ার করুন