উখিয়ায় পরিবার পরিকল্পনা অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না

imagesশফিক আজাদ, স্টাফ রিপোর্টার

উখিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ঘুষ ছাড়া কাজ হয়না। মাঠ পর্যায়ের দুই পরিবার পরিকল্পনা কর্মী একই পদে একই জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় দাপট দেখিয়ে চাকুরীর কারনে তারা বেপরোয়া হয়েছে উঠেছে। এদের ব্যবহার অতিষ্ট হয়ে পড়েছে স্থানীয় লোকজন। এমস তাদের কাছে পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে গেলে তারা মহিলাদের সাথে র্দূব্যবহার করে থাকে। এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী অনেক মহিলার। যার কারনে একদিকে সরকারের সুদুর প্রসারী উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে, অপরদিকে জনসংখ্যা জ্যামিতিকহারে বেড়েই চলছে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মৃদুল কুমার আচার্য্য যোগদানের পর থেকে উক্ত দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের অনিয়ম দূর্নীতি বৃদ্ধি পেয়েছে এমনি অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের।
অভিযোগের সুত্রে জানা গেছে, পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম সহ দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের উন্নয়নে বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। স্থানীয় জনসাধারনের মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে এবং দরিদ্র জনগোষ্টিসহ তৃনমূল পর্যায়ের সর্বত্রে চিকিৎসা সেবা প্রদানের নিমিত্তে সরকারী হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু সরকারী হাসপাতাল গুলোতে এ অবস্থা করুন। বিশেষ করে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু কর্মচারী দীর্ঘ দিন ধরে একই জায়গায় একই পদে বহাল তবিয়তে থেকে সেবা নিতে আসা সহজ সরল মহিলাদের সাথে দূর্ব্যবহার করে থাকে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উখিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে পুরুষদের যাতায়ত পরিলক্ষিত হয় নাই। এখানে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি সম্পর্কে পুরুষরা একেবারে অসচেতন। পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা পুরষদের জন্মবিরতিকরন পদ্ধতি সর্ম্পকে সচেতন করেনা। নিয়ম রয়েছে কর্মীদের মাঠ পর্যায়ে বাড়ী বাড়ী গিয়ে পদ্ধতি সর্ম্পকে সচেতন করা এখানে এ নিয়ম উপেক্ষিত। কিছু কিছু মহিলা নিজ উদ্যোগে নিকটস্থ হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্টানে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম গ্রহন করার জন্য গেলে কর্মীরা তাদের সাথে দূর্বব্যবহার করে এবং সরকারী ভাবে বরাদ্ধকৃত জন্মবিরতিকরন পিল সহ বিভিন্ন ওষুধ সামগ্রী তাদের না দিয়া কৌশলে কালো বাজারে বিক্রয় করে দেয়। ভুক্তােগী মহিলাদের অভিযোগ, উখিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সহকারী মোহাম্মদ হারুন মহিলাদের সরকারী বরাদ্ধের ওষুধ না দিয়া নাম ঠিকানা রেজিষ্টারে লিখে কৌশলে কালো বাজারে বিক্রয় করে দেয়। পরার্মশ হিসাবে মহিলাদের গর্ভরোধের জন্য নোরিক্স, ইমকন-১, ওবাষ্টেট গোল্ড, ফেমিপিল, ফেমিকন, রেডিকন, মার্বেলন, নরডেট-২৮ সহ বিভিন্ন কোম্পানীর পিল এবং পুরুষদের জন্য রাজা ও হিরো কনডম সহ বিভিন্ন কোম্পানীর কনডম ব্যবহারের পরামর্শ দেয়। একটি সূত্র দাবী করছে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা এসব কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসারদের নিকট থেকে অন্যায় সুবিধা গ্রহন করে এসব কোম্পানীর ওষুধ সেবন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে। ধনী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলারা বাহিরের ফার্মেসী থেকে এসব জন্ম বিরতিকরন পিল ক্রয় করে খেতে সম্মত হলেও দরিদ্র জনগোষ্টির ক্ষেত্রে তাহা অসম্ভব হয়ে যায়। যার কারনে অনেক মহিলার অনিচ্ছা থাকা স্বত্বেও বিপদে পড়ে গর্ভ ধারন করতে হয়। অসময়ে গর্ভধারনের কারনে শিশু মৃত্যু ও মাতৃমৃত্যু রোধ করা যাচ্ছেনা।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, উখিয়ার ডিগলিয়পালং এক বাড়ী থেকে বিজিবি’র সদস্য গত ২৫ ফেব্রুয়ারী সাড়ে ৮শত পাতা সুখি পড়ি উদ্ধার করেছে। এছাড়াও বিজিবি সদস্য সীমান্তের পয়েন্ট থেকে বিপুল পরিমান সরকারী বিক্রয় নিষিদ্ধ জন্মবিরতিকরন পিল (মায়া ও সুখী বড়ি) উদ্ধার করে মামলা দায়ের করার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কিভাবে কোন হাসপাতাল থেকে এসব জন্মবিরতিকরন পিল (মায়া ও সুখী বড়ি) দূর্নীতির মাধ্যমে বিক্রয় করেছে সে বিষয়ে কোন প্রকার রহস্য জানার চেষ্টা করেনা। যার কারনে দূর্নীতাবাজ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা অধরায় থেকে যায়। উখিয়া উপজেলা আনসার কোম্পানী কমান্ডার জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানান, আনসার ভিডিপি সদস্য/সদস্যাদের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা থাকিলেও পরিবার পরিকল্পনা অফিসে জন্ম বিরতিকররনের ওষুধের জন্য সদস্যগন গেলেও কিংবা দেড় ২ মাসের এম আর পদ্ধতি গ্রহনের জন্য হাসপাতালে গেলেও টাকা ছাড়া বর্ণিত হাসি প্রভা লালা ও কহিনুর আক্তারগন কোন ধরনের সহযোগীতা করেনা। যার ফলে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ন্যায় গুরুত্বপূর্ন দপ্তরে সীমাহীন দূর্নীতি বেড়ে যাওয়ায় কর্মকর্তা কর্মচারীগন ইচ্ছামত সরকারী সম্পদের অপচয় করার সাহস পাচ্ছে। বাচ্চার বয়স কম থাকা কালীন এক থেকে ২ মাসের এম আর পদ্ধতি গ্রহনের জন্য যাওয়া ভুক্তভোগী দম্পতির নিকট থেকে উখিয়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কর্মচারী হাসি প্রভা লালা ও আয়াগন তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করে থাকে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মৃদুল কুমার আচার্য্য কে বার বার অভিযোগ করিলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননা এবং বহাল তবিয়তে ভিজিটরও আয়াগন একই জায়গায় দীর্ঘদিন থাকিয়া ঘুষের লেনদেন অবাধে করে যাচ্ছেন। তাদের দাবী প্রতিদিনের ঘুষের আয়ের টাকা হইতে সিংহভাগ টাকা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দিতে হয় বলেই অভিযোগ করেন তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মৃদুল কুমার আচায্য তার নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ ঘুষ বা সুবিধা আদায়ের কথা অস্বীকার করে বলেন, কোন কর্মকর্তা,কমচারী এ দুর্নীতির সাথে লিপ্ত থাকলে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন