উখিয়ায় থমকে গেলে শিক্ষক বদলি, শিক্ষকেরা হতাশ

1436241356_2547_1শফিক আজাদ, উখিয়া

উখিয়া উপজেলার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জানুয়ারীর ১তারিখ থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত ৩মাস সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও শিক্ষা অফিসারের ব্যর্থতার কারণে কোন শিক্ষককে বদলি করতে পারেনি। এ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করতে গেছে। আবার কেউ কেউ এহেন ব্যর্থতার কারনে শিক্ষা অফিসারের অপসারণের ও দাবী তুলেছেন।
সুত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার ৫ ইউনিয়নে ৭৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে ৪শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। এসব শিক্ষকদের বদলির ব্যাপারে প্রতি বছর ১ জানুয়ারী থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত ৩মাস সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ বদলি হতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ওই স্কুলে (কর্মস্থলে)। তাই এটি তাদের ন্যায্য বদলি বললেও চলে। এই সুযোগে চলতি বছরে এই বদলিকে বাণিজ্য হিসেবে গুটি কয়েক শিক্ষকদের নিকট থেকে শিক্ষা অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কতা-ব্যক্তিরা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। বিষয়টি শিক্ষা কমিটি জানতে পেরে উপজেলার সমস্ত বদলি বন্ধ করে দেয়। এমনকি এসব দুর্নীতির কারনে শিক্ষা কমিটির বার্ষিক রেজুলেশনের স্বাক্ষর করেনি শিক্ষা কমিটির সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও কয়েকজন শিক্ষককে বদলির জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও স্থানীয় সাংসদ নির্দেশ দিলেও তা বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখায় উপজেলা শিক্ষা অফিস।
পশ্চিম হলদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন জাহানের স্বামী উখিয়া কৃষি ব্যাংকের অফিসার নুর হোছাইন অভিযোগ বলেন, আমার স্ত্রীকে বদলি করার জন্য শিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ দিলে তিনি বিষয়টি রেজুলেশন সহ যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট প্রেরণ করেন। কিন্তু উপজেলা শিক্ষা অফিসার মন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষিত করে আমার স্ত্রী বদলি আর্দেশ করেনি। একই ভাবে এডভোকেট আনোয়ার ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রী তাহেরা বেগমকে ডেইলপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বদলির জন্য স্থানীয় সাংসদ থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা সুপারিশ করার পরও শিক্ষক অফিস বদলি করেনি। একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা উম্মে সালমা উর্মি হতাশ কন্ঠে বলেন, তাকেও বদলির জন্য স্থানীয় সংসদ আব্দুর রহমান বদি সুপারিশ করেছে কিন্তু কি কারণে বদলি করেনি তা জানেনা সে। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামীম ভূইঁয়া বলেন, শিক্ষা কমিটির সভায় শিক্ষক বদলির ব্যাপারে কোন প্রস্তাব গৃহীত না হওয়া বদলি সম্ভব হয়নি। তবে বদলি প্রার্থী ফাইল গুলো নথিজাত করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, শিক্ষক বদলির ব্যাপারে শিক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নেবেন, আমার কোন হাত নেই সেখানে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, উখিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে এখনো পর্যন্ত কোন প্রকার বদলির কাগজপত্র আমার অফিসে আসেনি তাই কোন শিক্ষক বদলি হয়েছে কিনা আমি বলতে পারবোনা। তবে বদলির পূর্বে উপজেলা থেকে যে প্রস্তাবনা জেলা শিক্ষা অফিসে দেওয়া তা পাঠানো হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি, এ ধরনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়নি বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান।


শেয়ার করুন