ঈমান বিষয়ে নবীজীর দুটি হাদিস

img018-680x365-400x214সিটিএন ডেস্ক:
ইসলামি শরিয়াতের ২য় মজবুত ভিত্তি সুন্নাতে রাসুলের এক পর্বতসম সংগ্রহ “সিহাহ সিত্তা” ছয়টি বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ। এই সিহাহ সিত্তার বিশাল ভা-ার থেকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ওলামারা নিজেদের প্রয়োজনে রাসুলের হাদিসে থেকে আলাদা আলাদা সংগ্রহ গড়ে তুলেছে। হাদীসের বাগানে এমন একটি গ্রন্থের নাম প্রিয় নবীর চল্লিশ হাদিস। সংকলন করেছেন হাদীসের ইমাম ইয়াহহিয়া বিন শরফুদ্দিন আন নববী। সেই সংকলন থেকে ৩টি হাদিস দেওয়া হলো,
হাদিস – ১
ওমর রা . বলেন, একদিন রাসুলে করিম সা. এর কাছে বসেছিলাম। এমন সময় সেখানে হঠাৎ করেই একজন লোক আমাদের সামনে উপস্থিত হন, যার পরিধানের কাপড় ছিল খুবই সাদা এবং চুল ছিল খুবই কালো। তার ওপর সফরের কোন লক্ষণই ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে আদৌ চিনত না। তিনি নবী সা. এর কাছে গিয়ে বসেন এবং নিজের হাঁটু তাঁর হাটুঁর সঙ্গে মিলিয়ে দেন এবং নিজের হাত তাঁর উরুতে স্থাপন করে বলেন, হে মোহাম্মদ !
আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন। হুজুরে পাক (সাঃ) বলেন, ইসলাম হচ্ছে এই যে, তুমি সাক্ষ্য দেবে, আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই এবং মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রসুল, নামায কায়েম করবে, যাকাত প্রদান করবে, রমযানে রোযা রাখবে এবং যদি সামর্থ থাকে তবে আল্লাহর ঘরের হজ্জ করবে।
তিনি বললেন, আপনি ঠিক বলেছেন। তার প্রতি আমাদের বিস্ময় হলো এ জন্যে যে, তিনি নিজে তাঁর কাছে জানতে চাচ্ছেন, আবার নিজেই তাঁর উত্তরকে সঠিক বলে ঘোষণা করছেন। তিনি বললেন, আচ্ছা আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, ঈমান হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর গ্রন্থসমূহ, তাঁর রসুলরা ও পরকালের বিশ্বাস করা এবং তাকদিরের ভাল মন্দকে বিশ্বাস করা । তিনি বললেন আপনি সঠিক বলেছেন। তিনি বললেন আমাকে এবার ইহসান সম্পর্কে বলুন।
তিনি (রাসূল সাঃ) বললেন: তা হচ্ছে এই যে, তুমি এমনভাবে আল্লাহর এবাদত করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছো, আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও তবে একথা জানবে যে, তিনি অবশ্যই তোমাকে দেখছেন। তিনি বললেন, কিয়ামত বিষয়ে আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেন, যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে তিনি জিজ্ঞেসকারীর চেয়ে এ ব্যাপারে বেশি কিছু জানেন না। তিনি বললেন, কেয়ামতের লক্ষণ মম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, তা হচ্ছে এই, দাসী (কোন কোন ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে মহিলা) নিজের মালিককে জন্ম দিবে, জুতা বিহীন ও বিবস্ত্র দরিদ্র রাখালরা উঁচু উঁচু ঘরবাড়ি বানাতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করবে।
তারপর লোকটি চলে গেলেন। আমি আরো কিছু সময় সেখানে বসে থাকলাম। এবার রাসূল (সা) আমাকে বললেন, হে ওমর ! তুমি কি জানো প্রশ্নকারী ব্যক্তিটি কে ছিলেন ? আমি বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, তিনি ছিলেন জিবরাঈল (আঃ) তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন। [মুসলিম]
হাদিস নং – ২
হযরত আবু আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহ বিন ওমর বিন খাত্তাব (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)কে বলতে শুনেছি, পাঁচটি খুঁটির উপর ইসলামের ভিত্তি রাখা হয়েছে। একথার সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই এবং মোহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর রাসূল। নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, আল্লাহর ঘরে হজ্জ করা এবং রমযানের রোযা রাখা। [বুখারী ও মুসলিম]


শেয়ার করুন