ঈদে পর্যটক বাড়ার প্রত্যাশা

parjotonSm_494111023সিটিএন ডেস্ক

রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিগত কয়েক বছর দেশের পর্যটন ব্যবসায় সংকট দেখা দিলেও ঈদকে সামনে রেখে এ খাতে সম্ভাবনা দেখছেন পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটন খাতের ব্যবসায় ভরা মৌসুম হলেও ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় দেশ-বিদেশের পর্যটকরা বেড়াতে যেতে পছন্দ করেন।

তাই আসন্ন ঈদে দেশের পর্যটন এলাকার বিভিন্ন হোটেল-মোটেল, রিসোর্টে অগ্রিম বরাদ্দ দেওয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছেন পর্যটন প্রতিষ্ঠান, হোটেল-রিসোর্ট মালিক ও পর্যটন অ্যাসোসিয়েশনের দায়িত্বশীল একাধিক ব্যক্তি।

তাদের মতে, এবার কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে হরতাল-অবরোধসহ কোনো ধরনের কঠোর ও ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি না থাকায় দেশে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় মানুষ নিরাপদ বোধ করছেন ও পর্যটন এলাকায় পর্যটকরা বেড়াতে যেতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। তাই বিগত বছরগুলোতে পর্যটন খাতে চলতে থাকা বেহাল অবস্থা এবার ঈদে দূর হবে বলে প্রত্যাশা করছেন এ খাত সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

তারা জানিয়েছেন, এবার ঈদের দুই/তিন দিন আগে থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত কক্সবাজার, বান্দরবান, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুন্দরবনসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকার নামি-দামি হোটেল, রিসোর্ট, গেস্টহাউজের কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া শেষ হয়ে গেছে।

এ খাতের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বিগত কয়েক বছর টানা অবরোধ-হরতালের কারণে পর্যটন খাতের ব্যবসায় মারত্মক সংকটে দেখা দিয়েছিল। ওই সময় কক্সবাজার, সিলেটসহ প্রধান প্রধান পর্যটন অঞ্চলে স্থবিরতা বিরাজ করেছিল। বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টে আকর্ষণীয় ছাড় দিয়েও সেই সময় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি।

তখন নামি-দামি তারকা হোটেলগুলো অতিথির অভাবে বড় ধরনের লোকসানের মধ্যে পড়েছিল। যে কারণে এ খাতকে শত শত কোটি টাকার লোকসান গুনতে হয়েছিল বলে তারা অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে গ্রিন হলিডেইস ট্যুরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বোরহান উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এবার আমরা আশানুরূপ পর্যটন পাচ্ছি। কক্সবাজার ও বান্দরবানে বেশ কিছু হোটেলের বুকিং প্রায় শেষ।

আবহাওয়া খারাপ থাকায় এবার পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে কোনো বুকিং নেননি বলেও জানান তিনি।

বোরহান উদ্দিন আরও বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত তিন বছর আমাদের ব্যবসায় মন্দা ছিল। কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থা দেখা যাচ্ছে।

কক্সবাজার সিগাল হোটেলের বুকিং কর্মকর্তা সানাউল হক জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে তাদের হোটেলে ২০ থেকে ২৫ জুলাই সময়ের মধ্যে সব কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। আর দুই/তিন দিনের মধ্যে হয়তো ঈদের আগের ও ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহের বুকিংও শেষ হয়ে যাবে।

সিলেটের হোটেল স্টার প্যাসিফিকের কর্মকর্তা হিবজু রহমান সাফি জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে তাদের হোটেলের বুকিংও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে ঈদের আগের ও পরের সপ্তাহের জন্য হোটেলের সব কক্ষ বুকিং শেষ হয়ে যাবে বলেও আশা করছেন তিনি।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক ও জার্নি প্লাসের নির্বাহী কর্মকর্তা তৌফিক রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে দেশের পর্যটন শিল্পক্ষেত্রে ভালো অবস্থা দেখা যাচ্ছে। কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, সিলেটে ঈদের দুই/তিন দিন আগে থেকে ঈদ পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বিভিন্ন হোটেল, রিসোর্ট সম্পূর্ণ বুকিং হয়ে গেছে।

তবে অফ সিজনের কারণে এ সময়ে বিদেশি পর্যটক তেমন আসছেন না বলে জানান তিনি।

এবার রাজনৈতিক কোনো সমস্যা না থাকায় অন্যান্য বারের তুলনায় পর্যটকরা অনেকটাই নিরাপদ বোধ করছেন, যে কারণে প্রত্যাশিত অতিথি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন টোয়াবের এ পরিচালক।


শেয়ার করুন