ইবি শিক্ষকের আলমারীর ভেতর থেকে ছাত্রী উদ্ধার

45658_150নয়া দিগন্ত:

নৈতিকতার এ কেমন অধপতন। যে শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর সেই শিক্ষকের আলমারিতে কিনা ছাত্রী! এমনটাই ঘটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হালিমের বাসায়। বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাস জুড়ে সমালচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে ।
জানাযায়, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হালিমের বাসা থেকে সাবিরা সুলতানা পুতুল নামে এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। আব্দুল হালিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক। একই বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সাবিরা সুলতানা পুতুল। আব্দুল হালিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে থেকে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আব্দুল হালিম ঝিনাইদহের আরাপপুর বাজারের যশোর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকে। সে মাঝে মাঝে তার বাসায় একটা মেয়েকে নিয়ে আসত। আমরা বেস কিছু দিন বিষয়টি লক্ষ করি। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সবাই কানাকানি শুরু করে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার আমরা মেয়েটিকে তার বাসায় প্রবেশ করতে দেখে তার পিছু নেই। কিছু সময় পর তার দরজায় কড়া নাড়লে সে দরজা খুলতে দেরি করে। ঘরে প্রবেশ করে আমরা হালিম ছাড়া কাউকে দেখতে পাইনি। “আপনার বাসায় একটা মেয়ে আছে” একথা বললে প্রথমে সে অস্বীকার করে। এক পর্যায়ে রুমের ভেতরে থাকা একটি আলমারির তালা নড়তে দেখে একজন আলমিরাতে আঘাত করে। আঘাতে ভেতর থেকে একটি মেয়ের কান্নার শব্দ শুনা যায়। পরে আলমারির তালা খুলে মেয়েটিকে আপত্তিকর অবস্থায় বের করা হয়। তখন আব্দুল হালিম বলে সে আমার বিভাগের ছাত্রী। আমার কাছে নোট নিতে এসেছিল।
এক পর্যায়ে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাদের মাধ্যমে বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. সাজ্জাদ হোসেন এবং ভিসির একান্ত সহকারী মনিরুল ইসলাম সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক কর্মকর্তা আব্দুল হালিমের বাসায় গিয়ে মেয়েটিকে প্রত্যক্ষদর্শীদের হাত থেকে মুক্ত করে।
এদিকে ঘটনা ক্যাম্পাসে জানাজনি হলে চারদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এনিয়ে ক্যাম্পাসে নানা ধরণের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিভাগের একধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, সাবিরার সাথে আব্দুল হালিম স্যারের অনেক আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন সময় তার কথা বর্তায় আমরা সেটা বুঝতে পারি। তার হলের বান্ধবিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাবিরা প্রায়ই আমাদের বলতো রেজাল্টের জন্য আমি সব করতে পারি।
তার ব্লকের এবং হলের আবাসিক ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাবিরা সুলতানা গত মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে হল থেকে বাইরে যায় এবং সন্ধা ৬টার দিকে হলে প্রবেশ করে।
বিষয়টি সাবিরা সুলতানা পুতুল প্রথমে অস্বীকার করে এবং বলে বিভাগের সকল শিক্ষকের চেয়ে হালিম স্যারের সাথে আমার খারাপ সম্পর্ক। তার সাথে আমার এমন সম্পর্কের প্রশ্নই আসেনা। বিকেলে সে হল থেকে কোথায় গিয়েছিল জানতে চাইলে সে কোন কথা বলেনি। পরে তাকে ফোন করা হলে সাংবাদিক বুঝতে পেরে সে ফোনের সংযোগ বিছিন্ন করে দেয়। এবিষয়ে বক্তব্য জানতে শিক্ষক আবদুল হালিমের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।


শেয়ার করুন