আসামে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বন্যার পানিতে একাকার

150815161809_assam_floods_640x360_dilipkumarsharna_nocredit-400x225সিটিএন ডেস্ক:
ভারতের আসামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির সঙ্গে সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটা বিস্তীর্ণ অংশ ধুয়েমুছে একাকার হয়ে গেছে।
ধুবড়ির জেলা প্রশাসন ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে বিবিসিকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে ওই জেলার বেশির ভাগ সীমান্ত -চৌকিই এখন জলের তলায়, ফলে বিএসএফ জওয়ানরা নৌকা-লঞ্চ বা কাছাকাছি উঁচু জায়গায় সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
ব্রহ্মপুত্রর জল ক্রমাগতই বাড়ছে, ফলে ধুবড়ির নদী ও স্থল-সীমান্ত পরিস্থিতি খুব তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক হওয়ার আশাও দেখা যাচ্ছে না।
আসামের ধুবড়ি জেলায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত মোট ১৩২ কিলোমিটার লম্বা, যার আবার প্রায় অর্ধেকটাই রিভারাইন বা নদী-সীমান্ত।
বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদী এই ধুবড়িতেই সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে ঢুকেছে – আর এখন এই গোটা সীমান্ত এলাকাটাই প্রায় বন্যার জলে প্লাবিত।
সীমান্তে মোতায়েন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফের ১৭ ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট বি বি সিধরা জানান, ‘ব্রহ্মপুত্রর জল এখন বিপদসীমার ১ মিটার ওপর দিয়ে বইছে। আর অধিকাংশ সীমান্ত -চৌকিই এখন পুরোপুরি জলের নিচে ডুবে গেছে। ফলে অন্য বিকল্প ব্যবস্থা করে আমাদের জওয়ানদের লঞ্চ বা বড় নৌকার ওপর সরিয়ে নিতে হয়েছে।’
‘তবে সীমান্ত ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, তাই কাছাকাছি উঁচু জায়গা থেকে জওয়ানরা সীমান্তে নজর রাখছেন। যদিও এই রুটে চোরাচালান বা অনুপ্রবেশের অনেক চেষ্টা হয়ে থাকে, তার পরেও জল এখন এতটাই উঁচু যে মানুষ এই অবস্থায় সীমান্ত পেরোনোর সাহস পাবে না বলেই আমাদের ধারণা’, বলছিলেন তিনি।
সীমান্ত থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে পর্যন্ত এলাকায় আইন-শৃঙ্খলাও বিএসএফের দায়িত্বে, বাকিটা রাজ্য পুলিশের।
কিন্তু জলে পুরো এলাকা ভেসে যাওয়ায় এখন সে সব এলাকা-ভেদেরও আর অস্তিত্ব নেই।
ধুবড়ি জেলার পুলিশ সুপার দিগন্ত বোরা বলছিলেন, ওই অঞ্চলের ভৌগলিক চরিত্রের কারণেই সীমান্তে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
জেলার পুলিশ প্রধান আরও বলেন, ‘তার পরেও আমি বলব, বন্যা হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি। কয়েকটা গ্রামে বন্যার প্রভাব নিশ্চয় পড়েছে, তবে বহু মানুষ এখন নিজেদের বাড়িঘরেই আছেন।’
ওদিকে চৌকি-ছেড়ে চলে আসা সীমান্ত রক্ষীদের জীবন যে বন্যায় দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, সে কথা স্বীকার করছেন বিএসএফ কর্মকর্তারাও।
ফলে সীমান্ত পাহারার কাজ যে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না সেটাও বলার অপেক্ষা রাখে না।
কমান্ডান্ট মি সিধরা যেমন বলছিলেন, ‘জওয়ানদের জন্য এখন নৌকা বা লঞ্চের ওপরই কোনওমতে রান্নাবান্না করতে হচ্ছে। বোতলে ভরা খাবার জল, এমন কী রান্নার জলও জলপথে নিয়ে আসতে হচ্ছে ধুবড়ি শহর থেকে। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছেন।’
এখন যতদিন না সেই বৃষ্টির পরিমাণ কমে বা ব্রহ্মপুত্রর জল বিপদসীমার নিচে নেমে আসে, ততদিন ধুবড়ি জেলার বিস্তীর্ণ একটা অংশে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থাকা না-থাকা কার্যত সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিবিসি


শেয়ার করুন