আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে যারা

e9762924280161f6521aeca22f712283-5সিটিএন ডেস্ক :

আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয় যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের খ্রিষ্টান দাতব্য সংগঠন বোয়াজ ট্রাস্ট। কিছুদিন আগেও বিপন্ন বিদেশিদের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয় খুঁজে পেতে বেগ পেত প্রতিষ্ঠানটি। গত সপ্তাহ থেকে সে ছবিটা হঠাৎই পাল্টে গেছে। এর কারণ, তিন বছর বয়সী সিরীয় শিশু আয়লান কুর্দির সেই মর্মস্পর্শী ছবি। ছবিটি প্রকাশের পর থেকে বোয়াজের কাছে শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের একের পর এক ফোন আসছে।
বোয়াজের প্রধান নির্বাহী রস হোল্যান্ড বলছিলেন, ‘এর আগে আশ্রয় দেওয়ার জন্য এত সাড়া পাইনি। সেদিন তো সেই গ্লস্টার থেকে একজন ফোন করে বললেন, “আমি ম্যানচেস্টার থেকে অনেক দূরে আছি। তবে আমার বাড়ির একটি ঘর খালি আছে। কোনোভাবে কী আমি সাহায্য করতে পারি?”’
হোল্যান্ড জানালেন, কয়েক শ মাইল দূরের স্কটল্যান্ডের এডিনবরা থেকেও ফোন পাচ্ছেন তাঁরা।
অবশ্য কেবল যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপজুড়েই বহু সাধারণ মানুষ নিজের বাড়ির ফাঁকা ঘরটা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন স্থান থেকে যাওয়া অভিবাসীদের ছেড়ে দিতে আগ্রহী।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন তার সদস্যরাষ্ট্রগুলোর জন্য কোটা নির্ধারণ করে দিয়েছিল, তখন আইসল্যান্ড মাত্র ৫০ জন সিরীয় শরণার্থী নিতে রাজি হয়। এর প্রতিবাদে ১৭ হাজার মানুষ দেশটির কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী ইগলো হারোয়ারদটির কাছে সরকারি নীতি পাল্টানোর দাবি করে। কেউ কেউ নিজেদের ঘর ছেড়ে দেওয়ারও প্রস্তাব দেয়। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নিজের বাসভবনে একটি পরিবারকে গ্রহণ করার প্রস্তাব দেন।
যুক্তরাজ্য এখন আগের চেয়ে কম সংখ্যায় বিদেশিদের আশ্রয় দেয়। দেশটির স্বরাষ্ট্র দপ্তরের হিসাব, এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদনের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৭৭১। অথচ ২০০২ সালেই এই সংখ্যা ছিল ৮৪ হাজার ১৩২। বিশেষ করে ডেভিড ক্যামেরনের বর্তমান রক্ষণশীল দলের সরকার অভিবাসন বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সাধারণ ব্রিটিশদের এ উদারতা একটা বড় বৈপরীত্য তুলে ধরে। তবে জনমতের চাপে যুক্তরাজ্য অতিসম্প্রতি বেশ কয়েক হাজার সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আগামী পাঁচ বছরে ২০ হাজার সিরীয় নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তাদের জন্য সাধারণ মানুষের ঘর খালি করতে হবে না। সরকার তাদের জন্য রচডেলের মতো কম খরচের জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করবে। আশ্রয়ের পাকা ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত তারা জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা সংস্থার (এনএইচএস) সুবিধাও পাবে। তাদের সন্তানেরা পাবে লেখাপড়ার সুযোগ। শরণার্থীরা প্রতি সপ্তাহে পাবে প্রায় ৩৭ পাউন্ড। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


শেয়ার করুন