আমি সুস্থ, ফিরে আসব: প্রধান বিচারপতি

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বললেন, আমি সুস্থ আছি, কারো চাপে নয়, স্বেচ্ছায় বিদেশে যাচ্ছি। আমার ধারণা, সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।আবার ফিরে আসব। শুক্রবার রাত ৯টা ৫৬ মিনিটে ঢাকার হেয়ার রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ি থেকে নেমে প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।একপর্যায়ে কাগজে লেখা একটি বিবৃতি দিয়ে দেন। সেখানে শুরুতেই বলা আছে, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।’ রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি বিমানে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সাংবাদিকদের দেওয়া বিবৃতিটি লেখা ছিল প্রধান বিচারপতির প্যাডে। নিচে ছিল প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষর। বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি, কিন্তু ইদানীং একটি রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী ও বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সরকারের একটা মহল আমার রায়কে ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে পরিবেশন করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার প্রতি অভিমান করেছেন, যা অচিরেই দূরীভূত হবে বলে আমার বিশ্বাস। সেই সাথে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে আমি একটু শঙ্কিতও বটে। কারণ গতকাল প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবীণতম বিচারপতির উদ্ধৃতি দিয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনে পরিবর্তন আনবেন। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনো রেওয়াজ নেই। তিনি শুধুমাত্র রুটিনমাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন। এটিই হয়ে আসছে। প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরো অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।’ এর আগে সকাল থেকে প্রধান বিচারপতির দেশ ত্যাগের খবর পেয়ে তার সরকারি বাসভবনে আত্মীয়স্বজনরা দেখা করতে যান। বেলা ১১টায় প্রধান বিচারপতির ভাই ড. এনকে সিনহা তার বাসভবনে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া ভাতিজির জামাই রাজ মনু সিংহ ১২টা ৪৫ মিনিটে, আরেক ভাতিজিজামাই সুজিত সিনহা, রাম কান্ত সিনহা প্রবেশ করেন ১০টা ২২ মিনিটে। শ্যালিকা শীলা সিনহা ও তার মেয়ে সীমা সিনহা প্রধান বিচারপতির বাসায় যান ১০টা ২৩ মিনিটে। প্রধান বিচারপতি আজই বিদেশ যাচ্ছেন এমন গুঞ্জনে তার বাসার সামনে বিপুলসংখ্যক গণমাধ্যমকর্মী ভিড় করেন। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানো হয়। পরে বাসভবন থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার উদ্দেশে বেরিয়ে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

নতুন বার্তা


শেয়ার করুন