অভাবনীয় দরপতন

আমন ধান নিয়ে হতাশ উখিয়ার কৃষক

images (1)শফিক আজাদ, স্টাফ রিপোর্টার 

চলতি মৌসুমে আমনের বাম্পার উৎপাদনেও হাসি ফোটাতে পারেনি উখিয়ার কৃষকদের। একদিকে ধানের দরপতন, অন্যদিকে ক্রেতার অভাবে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। হাটবাজারে অনাকাঙ্কিতভাবে ধানের দরপতনের কারণে আমন চাষীদের একর প্রতি লোকসান গুনতে হচ্ছে ৯-১০ হাজার টাকা করে। ধানের বাজারে মন্দাভাব নিয়ে ্অনেকেই এখনো পর্যন্ত পাকা ধান ঘরে তুলেনি। তবে সরকারিভাবে ধান ক্রয় অভিযান শুরু হলে ধানের দর উঠানামা করতে পারে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ সংশ্লিষ্টরা।
কৃষকদের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে আমনের আশাতীত ফলন হওয়ায় শুরুতে ধান নিয়ে কৃষকেরা যে স্বপ্ন দেখেছিল হঠাৎ করে ধানের দরপতনের ঘটনা নিয়ে তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। কৃষকেরা জানান, জমি পরিচর্যা, বীজ লাগানো, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ, ধান কাটা ও মাড়াই সহ প্রতি মন ধানের উৎপাদন ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৫শত টাকা থেকে ৬শত টাকা পর্যন্ত। উৎপাদিত এ ধানের বর্তমান বাজার দর হচ্ছে মন প্রতি ৪ থেকে সাড়ে ৪শ টাকা। ফলিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক হাজ্বী আবদুর রহমান জানান, আমন ধান উৎপাদন খাতে যে পরিমান ব্যয় হয়েছে তা বাজারে বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরীর টাকা পোষানো সম্ভব হবে না। পালংখালী আনজুমান পাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার জানান, চলতি মৌসুমে সে প্রায় ২ একর জমিতে আমন চাষাবাদ করেছে। একর প্রতি তার উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী একর প্রতি উৎপাদিত ধান বিক্রি করে ১৮-২০ হাজার টাকার অধিক পাওয়া যাবে না।
ধানের অভাবনীয় দরপতনের কারণ জানতে চাওয়া হলে পালংখালীর চাতাল মালিক শামশুল আলম সওদাগর জানায়, সরকারিভাবে ধান, চাল ক্রয় অভিযান প্রতি বছর বাস্তবায়ন করা হলেও স্থানীয় কৃষকেরা তার সুফল পাচ্ছে না। সে আরো জানায়, খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় মিলারেরা সিন্ডিকেট করে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকে কম দামে ধান, চাল ক্রয় করার কারণে স্থানীয় কৃষকেরা সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যে কারণে ধানের দর আশাতীতভাবে কমে গেছে। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা সুনিল দত্ত জানান, সরকার ধান, চালের ক্রয়মূল্য এখনো পর্যন্ত নির্ধারণ করেনি। তাই ধানের দর উঠানামার ব্যাপারে কিছু মন্তব্য করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন শীল জানান, সরকারিভাবে ধান, চাল ক্রয় অভিযান শুরু করা হলে ধানের দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, এবার আমন মৌসুমে বাম্পার উৎপাদন হলেও দরপতন নিয়ে কৃষকেরা হতাশ।


শেয়ার করুন