আবার বন্যার আশঙ্কা


ভারত আবারো গজলডোবা ব্যারাজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় দেশে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে গত তিন দিনের মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অপরদিকে ভারতের গজলডোবো ব্যারাজের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলে নতুন করে আবার বন্যা দেখা দিয়েছে।

বিশেষ করে ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বন্যার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নীলফামারী সদর ও ডিমলা উপজেলাসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী লালমনিরহাট জেলার দোয়ানিতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি শনিবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার এবং সকাল ৯টায় ২৭ সেন্টিমিটার (৫২ দশমিক ৪০ মিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সব (৪৪টি) স্লুইস গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহীম জানান, তিস্তায় ভারী বর্ষণ ও ভারতের গজলডোবো ব্যারাজের সব জলকপাট খুলে দেয়ায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তার জন্য ওপরে বলা হয়েছে।

এদিকে তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। গত তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ২৫ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। যে কারণে তিস্তার তীরবর্তী লোকজনকে (বন্যার্তদের) মাইকিং করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। নীলফামারী সদরের ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে শহরের বাড়াই পাড়া, বাবু পাড়া, সওদাগড় পাড়া, নিউবাবুপাড়া, সবুজ পাড়া, থানা পাড়ার প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

এছাড়া পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীবেষ্টিত চর ও চরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউর করিম জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলে ও ভারত থেকে নেমে আসা তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বন্যার্তদের খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে ও দুর্গতদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন