আত্মসমর্পণের বদলে বিকট বিস্ফোরণ, র‌্যাবের গুলি

 ঢাকাটাইমস :

মিরপুরের মাজার রোডে ঘিরে রাখা জঙ্গি আস্তানায় বিকট শব্দে পর পর পাঁচটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এতে সেখানে আগুন ধরে যায়। তবে কিছুক্ষণ পর আগুন নিভে গেলেও প্রচুর কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা যাচ্ছে। বাড়িটিতে রাখা রাসায়নিক বিস্ফোরণের কারণে আগুন লাগতে পারে বলে ধারণা করছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪৯ মিনিটে ওই পাঁচটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এর পরপর র‌্যাব বাড়িটি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। বোমার স্প্লিন্টারে চার র‌্যাব সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীটির গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।

তিনি জানান, জঙ্গিদের সাথে বিভিন্নভাবে সমঝোতা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। তারা সময় চেয়েছিল। কিন্তু রাত ৯টা ৪৯ মিনিটে পাঁচটি বিস্ফোরণ হয়। এতে র‌্যাবের চারজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

তবে বাড়ি ভেতরে অবস্থান করা জঙ্গিদের কী পরিণতি হয়েছে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।

ওই বাড়িতে অবস্থান করা জঙ্গি আবদুল্লাহর রাত আটটার মধ্যে আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও এশার নামাজের জন্য সময় নেন তিনি। নামাজের পর তিনি আত্মসমর্পণ করবেন বলে র‌্যাবকে জানিয়েছিলেন।

আবদুল্লাহর আত্মসমর্পণের জন্য যখন অপেক্ষা করছিল র‌্যাব, তখন ওই বিস্ফোরণ ঘটে।

এর আগে রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘটনাস্থলে থাকা আমাদের প্রতিনিধি র‌্যাবের একজন কর্মকর্তার সঙ্গে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের কথোকথনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছে। আবদুল্লাহ এশার নামাজ পড়ার জন্য সময় নিয়েছেন।

এরপর রাত সোয়া নয়টার সময় ওই বাড়ির দিকে র‌্যাবের একটি বোমা ডিসপোজাল উইনিটের গাড়ি যায়। এর আধা ঘণ্টা পর ৯টা ৪৯ মিনিটে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে র‌্যাবের মুখপাত্র মুফতি মাহমুদ খান জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহর আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছেন। রাত সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।

এরপর নিরাপত্তাবেষ্টনীর বাইরে অবস্থান করা টিভি ক্যামেরাসহ সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলের দিকে নিয়ে যান র‌্যাবের সদস্যরা।

এর আগে আমাদের প্রতিবেদক সন্ধ্যা ছয়টায় জানান, র‌্যাবের বেশ কিছু সদস্যকে অত্যাধুনিক ও ভারী অস্ত্র নিয়ে বাড়িটির সংশ্লিষ্ট এলাকার দিকে যেতে দেখা গেছে। এটা অভিযান পরিচালনার পূর্বতৎপরতা বলে ধারণা করছেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।

তবে মুফতি মাহমুদ জানান, জঙ্গি আবদুল্লাহর কাছে প্রচুর বিস্ফোরক রয়েছে। পিস্তলও থাকতে পারে। আত্মসমর্পণের সময় যেকোনো ধরনের পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকবে র‌্যাব।

আজ দুপুরে ১২টার দিকে র‌্যাবের মহাপরিচালক ঘটনাস্থলে এসে জানিয়েছিলেন, ছয়তলা বাড়িটির পঞ্চম তলার ফ্ল্যাটে জঙ্গি আবদুল্লাহ দুই স্ত্রী, দুই শিশুসহ বসবাস করেন। সেই জন্য অভিযান চালাতে দেরি হচ্ছে।

জঙ্গি আবদুল্লাহকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে র‌্যাব দুপুরে আরো জানিয়েছিল, আবদুল্লাহ সময় চেয়েছেন আত্মসমর্পণের জন্য।

সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে দারুস সালামের ২/৩/বি নম্বর বাড়িটি ঘিরে রেখেছে র‌্যাব। সকালের দিকে ওই বাড়ির অন্য সব বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়।


শেয়ার করুন