আগামী বছর নৌবাহিনীতে যুক্ত হচ্ছে দুটি সাবমেরিন

118998_1সিটিএন ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যেই নৌবাহিনীকে একটি কার্যকরী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ লক্ষ্যে সরকার স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি অত্যাধুনিক ও শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৬ সালের মাঝামাঝি নৌবাহিনীতে ২টি সাবমেরিন যুক্ত করা হবে। ইতোমধ্যে সাবমেরিনের জন্য ঘাঁটি ও অন্যান্য অবমাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে।’

রবিবার মংলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর দীগরাজ নৌ-ঘাঁটিতে একটি ‘অয়েল ফ্লিট ট্যাঙ্কার’ কমিশনিং এবং ২টি ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট ইউটিলিটি (এলসিইউ) ও ২টি ল্যান্ডিং ক্রাফ্ট ট্যাঙ্কার সংযুক্তকরণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী মংলা নৌ-ঘাঁটিতে পৌঁছলে বিমানবাহিনী প্রধান ভাইস এডমিরাল ফরিদ হাবিব এবং খুলনা নৌ-অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার তাকে স্বাগত জানান। পরে নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড-অব-অনার জানায়। তিনি গার্ড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।

পেশাগত দক্ষতা বজায় রাখার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে নাবিকদের প্রতি আহ্বান্ জানিয়ে বলেন, ‘কর্মকর্তা ও নাবিকগণ পেশাগত দক্ষতা মাধ্যমে উন্নততর কর্মদক্ষতা, শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ডের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মর্যাদা সব সময় সমুন্নত রাখবেন।’

তিনি বলেন, ‘ভৌগোলিক ও কৌশলগত অবস্থানের কারণে দেশের সমুদ্রসীমা ও এর সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আগেই এই সত্য অনুধাবন করে তার ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলনে পাকিস্তানের নৌবাহিনীর সদর দফতর পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠার দাবি করেছিলেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অগ্রযাত্রা বেগবান হয়। সে সময় অত্যাধুনিক মিসাইল ফ্রিগেট বানৌজা বঙ্গবন্ধু, লার্জ-পেট্রোল ক্রাফ্ট মধুমতি, পেট্রোল ক্রাফ্ট বরকত, তিতাস, কুশিয়ারা এবং ট্যাঙ্কার ইমাম গাজ্জালী নৌবাহিনীতে কমিশন করা হয়। এছাড়া রুগ্ন খুলনা শিপইয়ার্ডকে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর ছিল আমাদের সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য বর্তমান মেয়াদে সরকারের উন্নয়ন পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যা ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমেরিকায় তৈরি আরো একটি ফ্রিগেট বানৌজা সমুদ্র অভিযান এবং গণচীনে নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক দুটি করভেট বানৌজা প্রত্যয় এবং স্বাধীনতা এ বছরেই নৌবহরে সংযোজিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অস্ত্র ও অন্যান্য পণ্য চোরাচালান রোধ এবং সমুদ্র পথ উন্মুক্ত রাখার মাধ্যমে সমুদ্র সম্পদ সুরক্ষায় আমাদের সরকার বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে সুসজ্জিতভাবে গড়ে তুলতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

প্রথমবারের মত দেশীয় ও বিদেশী প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের শিপইয়ার্ডে তৈরি নৌবাহিনীর দ্রুতগামী ট্যাঙ্কার চালুর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই অব্যাহত অগ্রগতি আজ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। দেশের শিপবিল্ডিং শিল্পের ইতিহাসে এটি একটি মাইলফলক। অদূর ভবিষ্যতে আমরা এই দেশে আরো উন্নত যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।’

মন্ত্রীবৃন্দ, সংসদ সদস্য, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, সেনাবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।


শেয়ার করুন