অতিদারিদ্র্য ১০ শতাংশের নিচে নামবে

images (3)সিটিএন ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে অতিদরিদ্রের সংখ্যা কমছে। বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি বছর শেষে প্রথমবারের মতো বিশ্বের অতিদরিদ্রের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসবে। অর্থাৎ প্রথমবারের মতো অতিদারিদ্র্যের হার একক অঙ্কে নেমে আসতে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক গত রোববার এক পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, ২০১৫ সাল শেষে সারা বিশ্বে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৭০ কোটি ২০ লাখে। ২০১২ সালে সারা বিশ্বে অতিদরিদ্রের সংখ্যা ছিল ৯০ কোটি ২০ লাখ। সেই হিসাবে তিন বছরের ব্যবধানে বিশ্বজুড়ে ২০ কোটি মানুষ অতিদারিদ্র্য অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসটি একজন ব্যক্তির দৈনিক আয়ের নতুন হিসাবে দেওয়া হয়েছে। নতুন হিসাব অনুযায়ী, যে ব্যক্তির দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯০ ডলারের কম, তিনিই অতিদরিদ্র হিসেবে বিবেচিত। ২০০৫ সাল থেকে ১ দশমিক ২৫ ডলারের নিচে দৈনিক আয়ের মানুষকে অতিদরিদ্র ধরা হতো। বিশ্বব্যাংক এও বলেছে, এখন থেকে আন্তর্জাতিক পরিসরে দৈনিক ১ দশমিক ৯০ ডলার আয় বিবেচনায় ধরে এ ‘দারিদ্র্যসীমা’ নির্ধারণ করা হবে।

তবে নতুন হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে অতিদারিদ্র্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। কারণ নতুন হিসাবে এখনো বাংলাদেশকে যুক্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ায় অতিদরিদ্রের সংখ্যা কমে আসবে সাড়ে ১৩ শতাংশে। অর্থাৎ চলতি বছর শেষে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার সাড়ে ১৩ শতাংশ লোক অতিদারিদ্র্যসীমার নিচে থাকবে। অথচ ২০১২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যার ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ লোক অতিদারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। সেখান থেকে চলতি বছর শেষে তা প্রায় ৫ শতাংশ কমে আসবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০১৪ সাল শেষে দক্ষিণ এশিয়ার মোট জনসংখ্যা ছিল ১৭২ কোটি।

পূর্বাভাস প্রকাশের দিন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বেশ ভালো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে, যা মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করেছে। তিনি বলেন, ‘মানব ইতিহাসে আমরাই প্রথম প্রজন্ম, যাদের সামনে পৃথিবী থেকে অতিদারিদ্র্য শেষ করে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রসঙ্গ বাংলাদেশ: ব্যক্তি পর্যায়ে অতিদারিদ্র্য নির্ধারণে বিশ্বব্যাংকের নতুন হিসাবে (দৈনিক আয় ১ দশমিক ৯০ ডলারের কম) বাংলাদেশের যুক্ত না হওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তথ্য-উপাত্তসংক্রান্ত গরমিলের কারণে নতুন হিসাবে এখনো বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বাংলাদেশের দারিদ্র্য পরিমাপের ক্ষেত্রে এখনো মাথাপিছু ১ দশমিক ২৫ ডলারের দৈনিক আয়কে বিবেচনায় ধরা হচ্ছে।

জাহিদ হোসেন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক তুলনা কর্মসূচির (আইসিপি—ইন্টারন্যাশনাল কম্পারিজন প্রোগ্রাম) আওতায় দাম সূচকের যে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে, তার সঙ্গে পরিসংখ্যান ব্যুরোর ভোক্তা পর্যায়ের দাম সূচকের তথ্যের বড় ধরনের গরমিল পাওয়া গেছে। এ কারণে বিশ্বব্যাংক এখনো বাংলাদেশকে নতুন হিসাবে যুক্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।-প্রথম আলো


শেয়ার করুন