শাইখুল ইসলাম ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালামের আদর্শিক দৃঢ়তা

একজন আলেম শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন এ সংবাদ শুনে ঘরবাড়ি ছেড়ে তার পিছু নিয়েছে শহরবাসী। জনশূন্য হয়ে যাচ্ছে গোটা শহর। অবিশ্বাস্য এই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল মিসরে। ৮০০ বছর আগে।
মিসরে তখন আল মালিকুস সালিহ নাজমুদ্দিন আইয়ুবের শাসনকাল। সেসময় মিসরের প্রশাসনে মামলুকদের কর্তৃত্ব বাড়ছিল। আরবীতে মামলুক বলা হয় গোলাম বা দাসকে। আইয়ুবী শাসনামলে আমীর ও সুলতানরা যুদ্ধের জন্য মামলুকদের উপর ভরসা রাখতেন। তাদের দেয়া হতো উচ্চতর প্রশিক্ষণ। মামলুকদের আরবী শেখানো হতো। ফিকহের প্রাথমিক শিক্ষা দেয়া হত। সাধারণত এই মামলুকদের সংগ্রহ করা হতো খাওয়ারেজম ও মা ওয়ারাউন্নাহার অঞ্চল থেকে। নিজেদের যোগ্যতাবলে মামলুকরা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের অবস্থান মজবুত করে। নাজমুদ্দিন আইয়ুবের আমলে একজন মামলুক সুলতানের সহকারী পদে নিয়োগ পান। এছাড়া আরো কয়েকজন মামলুক প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ন পদে অবস্থান করছিলেন। এ বিষয়ে মিসরের আলেমরা চুপ থাকলেও একজন আলেম গর্জে উঠেন। তিনি পরিস্কার ভাষায় জানিয়ে দেন, এই সকল আমীরদের শরিয়তসম্মত পন্থায় মুক্ত করা হয়নি। তাই এরা ক্রীতদাস হিসেবেই বিবেচিত। এদের সাথে লেনদেন করা শরিয়তের দৃষ্টিতে ঠিক হবে না।
শাইখের এই ফতোয়ার ফলে জনমত প্রভাবিত হয়। বাধ্য হয়ে আমিররা এই আলেমের কাছে এসে বললেন, আপনি কী চান? শাইখ বললেন, আমি চাই বড় একটি মজলিস ডাকা হবে। সেখানে বাইতুল মালের পক্ষ থেকে আপনাদের নিলামে চড়ানো হবে। এরপর আপনাদেরকে শরয়ী পন্থায় আযাদ করা হবে।
আমিরদের জন্য পুরো ব্যাপারটিই ছিল লজ্জাকর। আমিররা এ বিষয়ে নাজমুদ্দিন আইয়ুবের সাথে আলাপ করেন। সুলতান নানাভাবে এই আলেমকে বুঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি কারো কথাই মানছিলেন না। শেষে সুলতান বিরক্ত হয়ে বললেন, এসবের সাথে তার কী সম্পর্ক? তাকে কে বলছে আমিরদের ব্যাপারে মাথা ঘামাতে?
সুলতানের কথা আলেমের কানে আসে। তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, তিনি মিসর ত্যাগ করে সিরিয়ায় হিজরত করবেন। তিনি দ্রুত তার পরিবারকে নিয়ে কায়রো ত্যাগ করেন। এদিকে এই আলেমের শহর ত্যাগের ঘটনা জানতে পেরে কায়রোতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উলামা, সুফি, ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার লোকেরা তার পিছু নেয়। তাদের একটাই কথা, শাইখ যে শহরে থাকবেন না, আমরাও সেখানে থাকবো না। শাইখ যেদিকে যাবেন, আমরাও সেদিকে যাবো।
সুবহানাল্লাহ, এ ছিল সমকালীন জনজীবনে একজন আলেমের প্রভাব। একজন আলেম শহর ত্যাগ করছেন বলে শূন্য হয়ে যাচ্ছে কায়রো।
এই সংবাদ পৌঁছল সুলতানের কানে। সুলতান নিজেই এবার শাইখের কাছে যান। তাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে কায়রো ফিরিয়ে আনেন। সুলতান সিদ্ধান্ত নেন, আমিরদেরকে নিলামে তোলা হবে। একথা শুনে সুলতানের সহকারী রেগে যান। তিনি বলেন, আমরা দেশের শাসক। আর সে আমাদের নিলামে তুলবে ? দেখি কীভাবে সে আমাদের নিলামে তোলে। আমি যাচ্ছি, সে বাড়াবাড়ি করলে তার গর্দান উড়িয়ে দিব। এই কথা বলে তিনি নাংগা তরবারী হাতে শাইখের ঘরের সামনে উপস্থিত হন। শাইখের ছেলে আবদুল লতিফ দরজা খুলে দেয়।
ছেলে পিতাকে জানায় সুলতানের সহকারী নাংগা তরবারী হাতে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। শুনে শাইখ বললেন, তোমার পিতার সৌভাগ্য, হয়তো সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হবে। শাইখ ঘর থেকে বের হন। শাইখকে দেখেই সুলতানের সহকারীর হাত কাপতে থাকে। তার হাত থেকে তরবারী পড়ে যায়।
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, হে আমাদের অভিভাবক, আপনি কী চান? শাইখ নির্বিকার কন্ঠে বলেন, আমি চাই তোমাদেরকে নিলামে তুলে বিক্রি করবো।
‘আমাদের মূল্য কী কাজে লাগাবেন?’
‘মুসলমানদের কাজে’
‘এর দাম কে দিবে?’
‘আমি নিজেই দিব’
সুলতানের সহকারী রাজি হয়ে যান। নির্ধারিত দিনে নিলাম ডাকা হয়। শাইখ সকল মামলুক আমিরকে নিলামে তোলেন। তাদের সম্মানের প্রতি লক্ষ্য রেখে উচু দাম নির্ধারণ করেন। সুলতান নাজমুদ্দিন আইয়ুব নিজের ব্যক্তিগত অর্থ থেকে সকল আমিরকে ক্রয় করে মুক্ত করে দেন। বিক্রয়মূল্য বাইতুল মালে জমা করা হয়।
সেদিন থেকে শাইখকে বাইউল উমারা বা আমির বিক্রেতা বলে অভিহিত করা হতে থাকে।
এই ঘটনা উল্লেখ করে তকিউদ্দিন আস সুবকি লিখেছেন, ইতিপূর্বে আর কোনো আলেমের ক্ষেত্রে এমনটা শোনা যায়নি। (১)
এ ছিল একজন আলেমের সাহসিকতা ও দৃঢ়তা। এই আলেম সাধারণ কেউ ছিলেন না। তিনি ছিলেন শাইখুল ইসলাম ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালাম।
ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালামের জন্ম ৫৭৮ হিজরীতে, সিরিয়ার দামেশকে। যুগের শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের কাছে তার পড়াশোনার পাঠ সমাপ্ত হয়। পড়াশোনা শেষে তিনি দীর্ঘদিন যাবিয়া-ই-গাযালিয়া নামক স্থানে দরস দেন। দামেশকের জামে উমাভির খতিব ছিলেন অনেকদিন। এসময় তিনি শিরক, বিদআত উচ্ছেদের ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তাঁকে সুলতানুল উলামাও বলা হতো।
সিরিয়ায় অবস্থানকালে শাইখ সিরিয়ার শাসক সালিহ ইসমাইলের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। সালিহ ইসমাইল ছিলেন মিসরের শাসক নাজমুদ্দিন আইয়ুবের ভাই। তবে দুই ভাইয়ের মধ্যে মিলের চেয়ে অমিলই বেশি ছিল। সালেহ ইসমাইল নিজের ভাইয়ের সাথে যুদ্ধ করার জন্য খ্রিস্টানদের সাথে চুক্তি করেছিল। চুক্তির শর্তাবলী ছিল,
১। সালেহ ইসমাইল খ্রিস্টানদের সয়দা ও সাকিফ শহর প্রদান করবে।
২। খ্রিস্টানদেরকে দামেশক থেকে অস্ত্র কেনার সুযোগ দেয়া হবে।
৩। মিশর আক্রমনের সময় সালেহ ইসমাইল খ্রিস্টানদেরকে সংগ দিবে। (২)
তিনটি শর্তই চুড়ান্ত অপমানজনক। কিন্তু ক্ষমতার লোভে মত্ত সালেহ ইসমাইলের এসব ভাবার সময় কোথায়।
শাইখ ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালাম জুমার খুতবায় এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য রাখেন। তিনি পরিস্কার বলে দেন, মুসলমানদের শহরগুলো সালেহ ইসমাইলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, যে সে চাইলেই যাকে ইচ্ছা দিয়ে দিবে। এছাড়া খ্রিস্টানরা এই অস্ত্র মুসলমানদের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করবে সুতরাং তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করাও নাজায়েজ। শাইখ ফতোয়া দিয়েই ক্ষান্ত হলেন না। তিনি জুমার খুতবায় সুলতানের জন্য দোয়া করা থেকে বিরত থাকেন। এছাড়া তিনি দোয়ায় বারবার বলতেন, হে আল্লাহ, আপনি ইসলামের অনুসারীদের সাহায্য করুন। মুলহিদ ও ধর্মের শত্রুদের লাঞ্চিত করুন।
অল্পকদিনের মধ্যেই শাইখের সকল পদপদবী কেড়ে নেয়া হয়। শাইখকে বন্দী করা হয়। কিছুদিন পর শাইখকে বাইতুল মাকদিসে পাঠানো হয়।
এদিকে সালেহ ইসমাইল, হেমসের শাসনকর্তা আল মালিকুল মানসুর ও খ্রিস্টান নেতারা মিসরে হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকে। তারা নিজস্ব সেনাবাহিনী নিয়ে বাইতুল মাকদিসে আগমন করে। সালেহ ইসমাইল শাইখের বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিল। সে নিজের এক সহকারিকে একটি রুমাল দিয়ে বলে এটি শাইখকে দিয়ে আসো। তুমি তাকে বলবে তিনি চাইলেই আমি তাকে পূর্বের সকল পদ ফিরিয়ে দিব। তিনি যদি তিনি তা না চান তাহলে তাকে আমার পাশের তাবুতেই বন্দী করে রাখা হবে। সেই আমির শাইখের কাছে এসে বললো, আপনি সুলতানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে ফেলুন। আপনি তার দরবারে যান। আপনাকে কিছুই বলতে হবে না। শুধু সুলতানের হাত চুম্বন করলেই হবে। তিনি আপনাকে আপনার সব পদ-মর্যাদা ফিরিয়ে দিবেন।
একটি সুবর্ণ সুযোগ। শাইখ চাইলেই আবার ফিরে পাবেন নিজের হারানো পদ-মর্যাদা। মুক্তি পাবেন কারাগার থেকে। আবার তিনি ফিরে যেতে পারবেন মসজিদের দরসে, মাদরাসার মসনদে। শাইখ চাইলে ভাবতে পারতেন, আমি মুক্ত হলে কতো কতো খেদমত করতে পারবো। কিন্তু শাইখ জানতেন, তার মুক্ত হওয়া মানে বশ্যতা স্বীকার করে নেয়া, পরাজিত হওয়া। যতক্ষণ সালেহ ইসমাইল নিজের কর্ম থেকে সরে আসবে না, ততক্ষন তার পক্ষ নেয়ার সুযোগ নেই।
শাইখ দীপ্ত কন্ঠে বললেন, আরে মূর্খ, বাদশাহ আমার হাত চুম্বন করুক, এটাও তো আমি চাই না। আর সেখানে আমি কেনো তার হাত চুম্বন করবো? শুনে নাও, তোমরা এক জগতের বাসিন্দা, আমি অন্য জগতের। প্রশংসা আল্লাহর, তোমরা যার হাতে বন্দী, আমি তা থেকে মুক্ত।
শাইখের জবাব শুনে শাইখকে সুলতানের পাশের তাবুতে বন্দী করা হয়। একদিন শাইখ সেই তাবুতে বসে তিলাওয়াত করছিলেন। পাশের তাবুতে সুলতান ও খ্রিস্টান রাজা বসা ছিল। সুলতান বললো, পাশের তাবুতেকে আছে জানো? সে মুসলমানদের মধ্যে একজন শ্রেষ্ঠ আলেম। তোমার সাথে চুক্তি করায় সে আমার বিরোধিতা করে। তাই আমি তাকে বন্দী করেছি। একথা শুনে খ্রিস্টান রাজা বললো, সে যদি আমাদের পাদ্রী হতো তাহলে আমরা তার পা ধুয়ে পানি পান করতাম।
কিছুদিন পরেই মিসরী বাহিনীর সাথে সালেহ ইসমাইলের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে সালেহ ইসমাইল ও খ্রিস্টানদের সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত হয়। শাইখ মুক্ত হন। তিনি মিসরের দিকে রওনা হন।
পথে কির্কের শাসক তাকে কির্কে অবস্থানের আবেদন জানান। শাইখ বলেন, তোমাদের এই ছোট শহর আমার জ্ঞানের ভার বইতে পারবে না। (৩)
শাইখ যখন মিসরে পৌছলেন (৬৩৯ হিজরীতে) তখন আত তারগিব ওয়াত তারহিব গ্রন্থের লেখক আল্লামা মুনযিরি বললেন, আজ থেকে আমি আর ফতোয়া দিব না। যে শহরে ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালামের মত আলেম অবস্থান করেন সেখানে অন্যদের ফতোয়া দেয়া উচিত নয়।
শাইখ একবার সুলতান নাজমুদ্দিন আইয়ুবের দরবারে উপস্থিত হন। দরবার চলছিল তখন। শাইখ সুলতানকে কোনো সম্মান না জানিয়ে সরাসরি বলেন, আইয়ুব তোমার রাজত্বে স্বাধীনভাবে মদপান করা হয়। কেয়ামতের দিন এ বিষয়ে আল্লাহ তোমাকে জিজ্ঞেস করলে কী জবাব দিবে?
নাজমুদ্দিন আইয়ুব বলেন, আসলেই কি এমনটা হচ্ছে? তখন শাইখ বিভিন্ন এলাকার নাম বলেন। সুলতান তখনই এসব মদের দোকান বন্ধ করার আদেশ দেন।
শাইখ শুধু নির্জন খানকাহয় বসা সাধক ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন মর্দে মুজাহিদ। একবার ক্রুসেডারদের সাথে নাজমুদ্দিন আইয়ুবের লড়াই চলছিল। ক্রুসেডাররা মানসুরা পৌছে গিয়েছিল। শাইখ ছিলেন মুসলিম বাহিনীর সাথে। যুদ্ধে খ্রিস্টানরা এগিয়ে গেলে শাইখ কয়েকবার , হে বায়ু, তাদেরকে আটকে ফেলো, বলে চিৎকার করেন। কিছুক্ষণ পরে বাতাসের গতি পালটে যায়, ক্রুসেডারদের অনেকগুলো জাহাজ ডুবে যায়। যুদ্ধের ফলাফল মুসলমানদের অনুকুলে এগিয়ে আসে। (৪)
৬৫৮ হিজরী। ১২৬০ খ্রিস্টাব্দ।
তাতারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সুলতান সাইফুদ্দিন কুতুয। সিরিয়া দখলের পর তাতারীরা এগিয়ে আসছে মিসরের দিকে। মিসরের কোষাগার প্রায় শূন্য তখন। সাইফুদ্দিন কুতুয সিদ্ধান্ত নিলেন জনগনের উপর কর ধার্য করবেন। যে মজলিসে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় শাইখ ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, দুটি শর্তসাপেক্ষে কর নেয়া জায়েজ হবে।
১। রাষ্ট্রিয় কোষাগারে সম্পদ না থাকতে হবে।
২। আমির ও সভাসদরা তাদের তরবারী ও ঘোড়া ব্যতিত সব বিক্রি করে দিবে। এরপরও যদি অর্থের দরকার হয় তখন কর বাসানো যাবে।
শাইখের এই ফতোয়া মেনে নেয় সবাই। আমিররা নিজেদের সকল সম্পদ বিক্রি করে দেয়। (৫)
এই ঘটনার সময় শাইখের বয়স ছিল ৮০ বছর। তবু শাইখ শরিয়াহর ব্যাপারে কঠোর ছিলেন। নিজেকে মাজুর মনে করে কুতুযের কাজের বৈধতা দেননি, কিংবা খাদেমবর্গ দ্বারাও প্রভাবিত হননি।
শাইখ ছিলেন উচু মাপের আলেম। ইবনুল হাজিব বলেছেন, ইযযুদ্দিন বিন আব্দুস সালাম গাজালির চেয়েও বড় ফকীহ ছিলেন।
তার সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেছেন, তিনি যুহদে ছিলেন অন্যদের চেয়ে অগ্রগামী। সর্বদা আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকারের দায়িত্ব পালন করতেন।
জালালুদ্দিন সুয়ুতী বলেছেন, তিনি শাইখুল ইসলাম, সুলতানুল উলামা।
ইবনুল ইমাদ হাম্বলী বলেছেন, তার যুগে তিনি একাই ছিলেন অনন্য। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাত্ররা তার কাছে আসতো। (৬)
শাইখ সত্য প্রচারে কঠোর ছিলেন। যা হক তাই প্রচার করতেন। নিজের ভুল হলে অকপটে স্বীকার করতেন। মিসরে অবস্থানকালে তিনি একটি ভুল ফতোয়া দেন। পরে তিনি প্রকাশ্যে ঘোষনা দেন , আমার ফতুয়াটি ভুল ছিল। কেউ যেন এর উপর আমল না করে। (৭)
শাইখের জানাযায় আল মালিকুজ জাহের রুকনুদ্দিন বাইবার্স বলেছিলেন, আজকে আমার শাসন প্রতিষ্ঠিত হলো। যদি তিনি বলতেন, হে জনতা তোমরা বের হও, বিদ্রোহ কর। তাহলে লোকেরা তাই করতো ।
শাইখ ইন্তেকাল করেন ৬৬০ হিজরীতে।
সূত্র–
১। তবাকাতুশ শাফিয়িয়্যাতিল কুবরা, ৮ম খন্ড, ২১৭ পৃষ্ঠা– আল্লামা তকিউদ্দিন আস সুবকি।
২। কিসসাতুত তাতার, ২৬২ পৃষ্ঠা– ড রাগেব সিরজানি
৩। তবাকাতুশ শাফিয়িয়্যাতিল কুবরা, ৮ম খন্ড, ২২৪ পৃষ্ঠা– আল্লামা তকিউদ্দিন আস সুবকি।
৪। তবাকাতুশ শাফিয়িয়্যাতিল কুবরা, ৮ম খন্ড, ২১৬ পৃষ্ঠা– আল্লামা তকিউদ্দিন আস সুবকি।
৫। তবাকাতুশ শাফিয়িয়্যাতিল কুবরা, ৮ম খন্ড, ২২৫ পৃষ্ঠা– আল্লামা তকিউদ্দিন আস সুবকি।
৬। আল ইয বিন আব্দিস সালাম সুলতানুল উলামা ওয়া বাইউল মুলুক– মুহাম্মদ যুহাইলি।
৭। হুসনুল মুহাদারা ফি তারিখি মিসর ওয়াল কাহেরা, ২য় খন্ড, ৩১৩ পৃষ্ঠা — জালালুদ্দিন সুয়ুতী।
৮। তবাকাতুশ শাফিয়িয়্যাতিল কুবরা, ৮ম খন্ড, ২১৫ পৃষ্ঠা– আল্লামা তকিউদ্দিন আস সুবকি।


শেয়ার করুন