র‌্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধ’

টেকনাফে দুই মাদক ব্যবসায়ী ও কুতুবদিয়ায় জলদস্যূ নিহত

 ইসলাম মাহমুদ

কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ ও দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় র‌্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে কুতুবদিয়া নিহত ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত জলদস্যূ। আর টেকনাফে দুইজন মাদক ব্যবসায়ী।

কুতুবদিয়ায় নিহত জলদস্যূ স্থানীয় অধিবাসী হলেও টেকনাফে নিহত দুইজন মাদক ব্যবসায়ী ময়মনসিংহ ও নারায়নগঞ্জ জেলার বাসিন্দা।

টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত দুইজন ট্রাকে করে নিষিদ্ধ মাদক ইয়াবার চালান পাচারকালে র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।

অপরদিকে কুতুবদিয়ায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে র‌্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা জলদস্যূ দিদারুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) ভোর রাতে সংঘটিত টেকনাফের ঘটনায় নিহত দুই মাদক ব্যবসায়ি হলেন ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালী এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে আশিকুল জাহাঙ্গীর কুদরত (৩২) ও নারায়নগঞ্জ জেলার তুলা বড় মসজিদ এলাকার আবদুল বারেকের ছেলে আরিফ হোসেন (৩০)।

র‌্যাব দাবি করেছে, ঘটনাস্থল থেকে এক লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সময় র‌্যাবের দুই সদস্যও আহত হন।

অন্যদিকে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় নিহত জলদস্যূ দিদারুল ইসলাম (৩২) উপজেলার লেমশীখালীর মৃত ইউছুফ নবীর ছেলে। র‌্যাবের দাবি, এই ঘটনায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলা-বারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাত ৪টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

র‌্যাবের টেকনাফ ক্যা¤প-১ এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহাতাব বলেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে গোপন সংবাদ পান যে, একটি ট্রাকে ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি বড় চালান কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দিয়ে পাচার হতে যাচ্ছে। এই খবর পাওয়ার কিছুক্ষণ পরই টেকনাফের কেরনতলী স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকায় র‌্যাবের চেকপোষ্ট বসানো হয়।

তিনি জানান, ওই চেকপোষ্টে তল্লাশিকালে একটি ট্রাক পৌছলে গাড়িটিকে থামানোর সংকেত দেয়া হয়। কিন্তু গাড়িতে থাকা লোকজন গাড়ি না থামিয়ে র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে পালানো চেষ্টা করে। ওই সময় র‌্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। এ সময় দুইপক্ষের মধ্যে ৫ মিনিট পর্যন্ত গুলিবিনিময় হয়। পরে ট্রাকটি ফেলে কয়েকজন লোক পালিয়ে গেলেও ওই ট্রাক থেকে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া দুইজনকে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এসময় আহত দুই র‌্যাব সদস্যকেও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহাতাব আরও বলেন, এ ঘটনায় জব্দ করা ট্রাকের ভেতর থেকে এক লাখ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, বিদেশিসহ ২টি অস্ত্র ও ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

র‌্যাবের তথ্য মতে, টেকনাফ থেকে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান কিনে তারা ঢাকায় পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। র‌্যাবের ধারণা, নিহত দুইজনই ইয়াবা ব্যবসায়ী।

এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন লেফট্যানেন্ট মাহাতাব।

এদিকে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দিদারুল ফেরদাউস সাংবাদিকদের জানান, নিহত দিদারের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতি, অস্ত্র, সন্ত্রাসি, ধর্ষণসহ ১৩টি মামলা রয়েছে। তার কাছ থেকে ৬টি একনলা বন্দুক, ২০টি কার্তুজ, ৯টি খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।


শেয়ার করুন