কক্সবাজারে ছড়িয়ে থাকা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের তালিকা করবে সরকার

সিটিএন ডেস্কঃ

গত কয়েক দশক ধরেই রাখাইন থেকে রোহিঙ্গারা দলে দলে দেশের সীমান্ত অঞ্চল কক্সবাজারে এসেছে। ২০১৬ সালে এসেছিল লাখখানেক। সবচেয়ে বড় অংশটি এসেছে ২০১৭ সালের আগস্টের পর। সংখ্যাটা এখন ১১ লাখেরও বেশি। এর আগেও কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বেশ কিছু রোহিঙ্গা অবৈধভাবে বাস করে আসছে। এদের একটি বড় অংশ তালিকাভুক্ত হলেও এর বাইরে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত আছে। তাদের নিবন্ধনের আওতায় আনতে চায় সরকার।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা টাস্কফোর্সের ৩৩তম বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৈঠকে সভাপতিত্বে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এজেন্সির প্রতিনিধি বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

নিবন্ধনের পাশাপাশি ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা বিষয়ক প্রকল্প, ৯৫ কোটি ডলারের যৌথ রেসপন্স প্ল্যান ও ভাসানচরসহ অন্যান্য বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যার হিসাব তো সরকারের কাছে থাকতেই হবে। রোহিঙ্গারা নিবন্ধনের আওতায় আসলে তাদেরও উপকার হবে।’

এর আগে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরির জন্য একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ওই শুমারি শুরু করে। পরে তা আর শেষ হয়নি।

এতে রোহিঙ্গারা কিভাবে উপকৃত হবে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ অনিবন্ধিত থাকলে তাকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। সে তখন আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে কোনও অধিকার পায় না। এ ধরনের ব্যক্তিকে আইনের আওতায়ও আনা হবে।’

আরেক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা সংক্রান্ত যেকোনও ধরনের প্রকল্পে আরও সমন্বয়ের প্রয়োজন বলে বৈঠকে জোর দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে যার প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, কিছু প্রকল্প আছে যেগুলো রোহিঙ্গাদের জীবিকা সম্পর্কিত। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ এতে রোহিঙ্গাদের সমাজে অন্তর্ভুক্তির ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ব ব্যাংকের রোহিঙ্গা বিষয়ক তহবিল থেকে কিছু প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে যার সুফল রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কক্সবাজারের স্থানীয়রাও পেতে পারে। এমনটা হওয়া উচিৎ নয় বলেও তিনি জানান।

‘রোহিঙ্গা ও স্থানীয় বাংলাদেশিদের প্রয়োজন এক নয়। এ কারণে দুই জনগোষ্ঠীর জন্য পৃথক প্রকল্প গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ যোগ করেন তিনি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, যদি খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, তবে রোহিঙ্গাদের জন্য একটি প্রকল্প এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য আরেকটি প্রকল্প নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভাসানচরে জাতিসংঘের প্রতিনিধি তাদের টেকনিক্যাল দল পাঠানোর জন্য আবারও অনুরোধ করেছে জানিয়ে আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকার চায় ভাসানচরে জাতিসংঘ আরও বেশি সম্পৃক্ত হোক। আমরা জাতিসংঘকে বলেছি ভাসানচরে টেকনিক্যাল দল পাঠানোর জন্য তারা যেসব শর্ত দিয়েছে সেগুলো বাস্তবতাবর্জিত এবং তারা যেন গ্রহণযোগ্য একটি প্রস্তাব দেয়।’

দুর্যোগ মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এ বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য।


শেয়ার করুন