সিটিএন ডেস্ক :
নিউইয়র্কে বাংলাদেশি এক গৃহবধূ স্বামীর অসাবধানতায় গাড়ির আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। বাড়ির গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করার সময় স্বামীকে সহায়তা করতে গিয়ে ওই গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান আমেনা বাতেন নূপুর নামের এই গৃহবধূ।
নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের ইস্ট ফ্ল¬াটবুশ এলাকায় এভিনিউ ডির কাছে ইস্ট ৩২ স্ট্রিটে গত ২৪ অক্টোবর শনিবার সকালে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। নূপুরের বয়স হয়েছিল ২৬ বছর।
জানা গেছে, নূপুরের স্বামী শাখাওয়াত হোসেন (৩১) তার ব্যক্তিগত গ্যারেজ থেকে কয়েকটি গাড়ির মধ্যে নিজের টয়োটা র্যাব-৪ গাড়িটি বের করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় স্ত্রী নূপুর দৌড়ে এসে স্বামীকে গাড়ি বের করতে সহযোগিতা করছিলেন। একপর্যায়ে স্বামী শাখাওয়াত হোসেন গাড়ির গতি বাড়িয়ে পেছনে নিতে চান। আর তখনই ঘটে দুর্ঘটনাটি। গাড়িটি নূপুরকে পাশের দেয়ালের সাথে প্রচ- বেগে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা লেগে নূপুর চিৎকার করতে থাকেন। নূপুরের চিৎকার শুনে বাসা থেকে দ্রুত দৌড়ে আসেন তার মামা জয়নাল আবেদীন দুলাল। তিনি ডা. শাখাওয়াতকে গাড়ি সামনে এগিয়ে নিতে বলেন। গাড়ি সামনে এগোতেই নূপুরের দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে তাকে নিকটস্থ কিংস কাউন্টি হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়েও নূপুরকে বাঁচাতে পারেনি। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নূপুর মারা যান।
ব্রুকলিন হাসপাতালের চিকিৎসক শাখাওয়াত তিন মাস আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স পান।
নূপুরের বাবা নির্মাণ ব্যবসায়ী আব্দুল বাতেন কয়েক বছর আগে মারা যান। সন্দ্বীপের গাছুয়া এলাকার সন্তান বাতেনের স্ত্রী এবং দুই মেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নূপুরের বাসায় থাকেন।
সম্প্রতি নূপুরের শ্বশুর ও শাশুড়িও বাসায় ওঠেন। বাসার দ্বিতীয়তলায় থাকেন নূপুরের মামা নির্মাণ ব্যবসায়ী দুলাল। দুর্ঘটনার সময় সবাই বাসায় ছিলেন।
নূপুর আমেরিকায় এসেছিলেন ১৫ বছর আগে। তার দুই মেয়ে সাদিকা (৪) ও সায়মা (১০ মাস) মাকে হারিয়ে নির্বাক। ছোট্ট সাদিকা কিছু বুঝতে পারলেও পারছে না সায়মা। নূপুরের এই অকালমৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।